Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অভিজিৎ-অস্ত্রে বিড়ম্বনায় বিজেপি

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল প্রাপ্তির পরেই সক্রিয় হয়েছে কংগ্রেস।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৯
Share: Save:

গুঞ্জনটা কাল থেকেই দানা বাঁধছিল বিজেপি শিবিরে— এত দিন এক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে সামলাতে হচ্ছিল। আর এক জন এসে জুড়লেন!

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল প্রাপ্তির পরেই সক্রিয় হয়েছে কংগ্রেস। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে তিনি রাহুল গাঁধীর ‘ন্যায়’ প্রকল্প তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন। রাহুল গত কালই এই অর্থনীতিবিদকে অভিনন্দন জানিয়ে সে কথা বলেছিলেন। আজ কংগ্রেস নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে কার্যত নিজেদের নতুন ‘আইকন’ হিসেবে এ দিন মেলে ধরল। আর তাঁকে সামনে রেখেই দিনভর দলের নেতারা বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদীকে।

নোবেল পাওয়ার ক’দিন আগেও ভারতের অর্থনীতি ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রভাব নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন অভিজিৎবাবু। এমনকি গত কালও তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতীয় অর্থনীতির হাল খুব খারাপ। অর্থনীতির গতি দ্রুত হারে শ্লথ হচ্ছে। সরকারও সেটা বুঝছে।’’ মোদী সরকার সম্পর্কে তাঁর মনোভাব বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতৃত্ব। সে কারণে গত কাল রাতে অভিজিৎবাবুকে অভিনন্দন জানাতে ঘণ্টা চারেক বাড়তি সময়ও নিয়ে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যেই কংগ্রেসের নতুন কৌশল বিজেপির বিড়ম্বনা আরও বাড়িয়েছে।

গত কাল রাহুল ও সনিয়া গাঁধীর পরে আজ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও টুইট করেন। ‘ন্যায়’ নামটিই প্রিয়ঙ্কারই দেওয়া। তিনি আজ শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘‘যুগান্তকারী ন্যায় প্রকল্পে উনি পরামর্শ দিয়েছিলেন। আশা করি, একদিন এই প্রকল্প বাস্তবে রূপ নেবে।’’ চিদম্বরম, কপিল সিব্বল, মণীশ তিওয়ারিরাও দিনভর বললেন, অর্থনীতির মোড় ঘোরাতে অভিজিতের কথাই শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রীর।

সদ্য গতকালই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী, অর্থনীতিবিদ পরকাল প্রভাকরের এক নিবন্ধ বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে মোদী সরকারের। কারণ, সেখানে তিনি গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়া অর্থনীতির দিশা ঘোরাতে নরসিংহ রাও-মনমোহন সিংহের অর্থনৈতিক মডেলকে অনুসরণ করার দাওয়াই দিয়েছিলেন। এ দিন মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘প্রভাকর, অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের কথা শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। মার্চ মাসেও যে অর্থনীতিবিদেরা তাঁকে চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছিলেন, অভিজিৎ ছিলেন তাঁদের মধ্যে।’’ কপিলের কটাক্ষ, নিজের ছবি না তুলে অভিজিতের কথা শুনে বরং কাজ করুন মোদী। আর তিহাড় জেল থেকে পরিবারের লোকেদের সাহায্যে করা টুইটে চিদম্বরম লিখেছেন, ‘‘অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় গত কাল ও রঘুরাম রাজন ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে যা বলেছেন, শুনুন। ভাল অর্থনীতি যে দিশায় যায়, মোদীর সরকার তার ঠিক উল্টো দিকে হাঁটে!’’

বিজেপির নেতারা কাল থেকেই অভিজিতের নোবেল নিয়ে খোঁচা দেওয়া শুরু করেছিলেন। আজ বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা বি এল সন্তোষ বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার ভোট সামনে। সকলেই পাঁচ দিনের জন্য খ্যাতি পেতে চাইছেন! মনমোহন সিংহ ১৯ অক্টোবর সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। হঠাৎ করে প্রভাকরেরও উদয় হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE