Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চিদম্বরমের দুই কৌঁসুলি মোদী নিয়ে তরজায়

সিঙ্ঘভি গত কাল দলের নেতা জয়রাম রমেশের সুরে সুর মিলিয়ে সব কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে মেলে না-ধরার পক্ষে সওয়াল করেন।

কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।

কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৪
Share: Save:

বাইশ গজের ম্যাচে একসঙ্গে ব্যাটিং করতে যাচ্ছেন অরুণ জেটলি আর কপিল সিব্বল। হাতে গ্লাভস, পায়ে প্যাড। দু’জনের মুখেই অনাবিল হাসি। নিজেদের সেই ছবিটি আজ টুইট করলেন কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা সিব্বল। সঙ্গে লিখলেন, ‘‘নিজের দল আর বন্ধুদের পাশে সব সময় দাঁড়িয়েছেন। আমার এক পুরনো বন্ধুকে হারালাম।’’ এর ঠিক আগের টুইটেই সিব্বল আজ নিশানা করেন নিজের দলের সতীর্থ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে। এই মুহূর্তে যিনি সিব্বলেরই সঙ্গে ব্যাট ধরেছেন প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের আইনি লড়াইয়ে।

সিঙ্ঘভি গত কাল দলের নেতা জয়রাম রমেশের সুরে সুর মিলিয়ে সব কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে মেলে না-ধরার পক্ষে সওয়াল করেন। সুর মেলান শশী তারুর, শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের মতো কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা। আজ তারই প্রতিবাদ করলেন সিব্বল। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিজেপির কোন নেতা প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলকে পরামর্শ দিয়েছেন, বিরোধীদের খলনায়ক বানানো বন্ধ করুন?’’

লোকসভা ভোটের তিন মাস হয়ে গেল। হারের কারণ নিয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা করেনি কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দু’দিনের মাথায় দলের কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছিল বটে। কিন্তু রাহুল গাঁধীর ইস্তফা ঘোষণাই ছেয়ে ছিল সে বৈঠকে। ফলে কংগ্রেসের অনেক নেতাই এখনও দলের নেতৃত্বের কাছে খোলাখুলি ভাবে নিজেদের মত জানাতে পারেননি। রাহুলের ইস্তফার পর সনিয়া গাঁধী যখন অন্তর্বর্তী সভাপতি হলেন, তার পরেই প্রকাশ্যে প্রথম মুখ খোলেন জয়রাম। তাঁর মতে, মোদী প্রশাসনের মডেলের পুরোটাই নেতিবাচক নয়। উজ্জ্বলা যোজনার মতো প্রকল্পে মোদী কোটি কোটি মহিলার মন জয় করেছেন। তাকে স্বীকৃতি না দিয়ে সব সময় মোদীকে খলনায়ক প্রতিপন্ন করলে তাঁর মোকাবিলা করা যাবে না। জয়রামের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন সিঙ্ঘভির মতো নেতাও।

চিদম্বরমের দুই আইনজীবী নেতার মধ্যে মতান্তর প্রসঙ্গে কংগ্রেস বলছে, ‘‘এটাই তো আমাদের দলের সৌন্দর্য। আমাদের দল গণতান্ত্রিক।’’ ভোটের আগে রাহুল গাঁধী তেড়েফুঁড়ে মোদীকে আক্রমণ করতেন। দুরমুশ করতে চেয়েছিলেন তাঁর ভাবমূর্তি। সেই অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি নন তিনি। সনিয়া গাঁধীও সেই অবস্থানই নিচ্ছেন। সিব্বল সেই মতেরই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। যদিও দলের এক নেতা বলেন, ‘‘খুব মন দিয়ে সিব্বলের বক্তব্য পড়লে বুঝতে পারবেন, আসলে তিনি সরাসরি সিঙ্ঘভিদের বিরোধ করেননি। বরং উল্টে বিজেপি ও মোদীকেই পরোক্ষে আক্রমণ করে বোঝাতে চেয়েছেন, কংগ্রেসের কিছু নেতা উদারতা দেখালেও বিজেপি সে
পথে হাঁটছে কোথায়? মোদী যে ভাবে কথায় কথায় নেহরু থেকে গাঁধী পরিবারকে আক্রমণ করেন, তার মোকাবিলায় কংগ্রেস কেন চুপ করে বসে থাকবে?’’

তবে কংগ্রেসের অনেক নেতার বক্তব্য, বিষয়টি এত লঘু করে দেখার নয়। হারের কারণ খতিয়ে দেখা উচিত দলের নেতৃত্বের। মোদীকে মোকাবিলার যে পথ ধরেছে কংগ্রেস, সেটি আদৌ ঠিক নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek manu Singhvi Kapil Sibbal P Chidambaram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE