আফতাব দাবি করেছেন, হিন্দি তিনি বলতে পারেন না। — ফাইল ছবি।
দিল্লি পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর থেকে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলে গিয়েছেন আফতাব পুনাওয়ালা। দাবি করেছেন, হিন্দি তিনি বলতে পারেন না। স্বীকার করে নিয়েছেন, শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে তিনিই খুন করেছেন। শ্রদ্ধা খুনে অভিযুক্ত আফতাব এখন দিল্লির মেহরৌলি থানার লকআপে রয়েছেন। গত শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর থেকে ইংরেজিতেই কথা বলে গিয়েছেন ২৮ বছরের ওই তরুণ। পুলিশের জেরায় বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমিই খুন করেছি শ্রদ্ধাকে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লিভ-ইন সঙ্গীকে গলা টিপে খুন করে ৩৫ টুকরো করেছেন আফতাব। তার পর ১৮ দিন ধরে সেই টুকরো ছড়িয়ে দিয়েছেন দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রায়ই শ্রদ্ধার সঙ্গে ঝামেলা হত আফতাবের। গত ১৮ মে ঝগড়া চরমে ওঠে। অভিযোগ, শ্রদ্ধার বুকের উপর চেপে বসে গলা টিপে খুন করেন আফতাব। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর শৌচালয়ে দেহটি ঢুকিয়ে রাখেন। গুগ্ল করে দেখতে থাকেন, কী ভাবে লোপাট করবেন খুনের প্রমাণ। পুলিশের ফরেন্সিক দলও যাতে অপরাধের হদিস না পায়, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে খোঁজ করেন তিনি। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দেহ টুকরো করার পর রক্ত মুছে ফেলার জন্য তাতে সালফার হাইপোক্লোরাইট মাখিয়েছিলেন আফতাব। তদন্তকারীদের দাবি, তিনি ভেবেছিলেন, এর ফলে ডিএনএর প্রমাণ মিলবে না। যে ছুরি দিয়ে দেহ টুকরো করেছিলেন, তা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, নিজের এবং শ্রদ্ধার রক্তাক্ত জামাকাপড় আবর্জনার গাড়িতে ফেলে দিয়েছিলেন আফতাব। তদন্তে জানা গিয়েছে, আফতাব বাড়ির পাশের দোকান থেকে কিনেছিলেন ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজ। সেখানেই রেখেছিলেন শ্রদ্ধার দেহের টুকরো। অভিযোগ, শ্রদ্ধাকে খুনের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে নতুন মহিলাদের সঙ্গে ডেট শুরু করেছিলেন আফতাব। তাঁদের নিয়ে আসতেন নিজেরই বাড়িতে। তখনও ঘরের ফ্রিজে রাখা ছিল শ্রদ্ধার দেহের টুকরো।
চলতি মাসেই শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়ালকার মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হন। এর পরেই মুম্বই পুলিশ শ্রদ্ধার ফোনের তথ্য খতিয়ে জানতে পারে, দিল্লিতে গিয়েছিলেন তিনি। তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশ। শনিবার গ্রেফতারের পর আফতাব স্বীকার করেন, বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলেই শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ঘরে খুন করে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করেছিলেন, সেখানেই রোজ রাতে ঘুমোতেন আফতাব। রোজ রাতে ফ্রিজে রাখা শ্রদ্ধার মুখ দেখতেন। দেহের সব টুকরো ফেলে দেওয়ার পর ফ্রিজটি ধুয়েমুছেও রেখেছিলেন আফতাব। আরও জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার আগে আরও অনেক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আফতাবের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy