‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশে অন্তত ২৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার খোঁজ মিলল পোকাধরা অ্যান্টিবায়োটিকের। তা-ও সেই মধ্যপ্রদেশেই। অভিযোগ, রাজ্যের এক সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশুকে ওই পোকাধরা ওষুধ খেতে দেওয়া হয়েছিল। খবর প্রকাশ্যে আসতেই আরও একবার শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্বালিয়র জেলার মোরার শহরের একটি সরকারি হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। সেখানে চিকিৎসাধীন একটি শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অ্যাজ়িথ্রোমাইসিন খেতে দেওয়া হয়েছিল। ছেলেকে ওষুধ খাওয়ানোর সময় মা দেখেন, ওষুধের বোতলে পোকা কিলবিল করছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান ওই মহিলা। এর পরেই হাসপাতালে মজুত করে রাখা অ্যাজ়িথ্রোমাইসিনের সমস্ত বাক্স সিল করে দেওয়া হয়। ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ভোপালের একটি পরীক্ষাগারে।
অ্যাজ়িথ্রোমাইসিন সাধারণত শিশুদের বিভিন্ন সংক্রমণের জন্য দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেনেরিক ওই ওষুধটি মধ্যপ্রদেশেরই একটি সংস্থার তৈরি। এ বিষয়ে ড্রাগ ইন্সপেক্টর অনুভূতি শর্মা বলেন, ‘‘মোরারের একটি সরকারি হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই মহিলা যে ওষুধের বোতলটি এনেছিলেন, তার সিল খোলা ছিল। কিন্তু অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক ভাবে অন্য কোনও ওষুধের বোতলে পোকামাকড় মেলেনি। তবে রোগীদের কথা মাথায় রেখে ওই হাসপাতালে মজুত থাকা ৩০৬টি অ্যাজ়িথ্রোমাইসিনের বোতল তড়িঘড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনুভূতি। ইতিমধ্যে ওই ওষুধের কয়েকটি বোতল পরীক্ষার জন্য ভোপালের একটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। ওষুধের নমুনা কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরিটরিতেও পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোল্ডরিফ নামে একটি কাশির সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশে ২৪টি শিশুর মৃত্যু হয়। পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানেও একই ওষুধ খেয়ে বেশ কয়েক জন শিশুর অসুস্থ হয়ে পড়ার কথা শোনা যায়। ওই ঘটনার পর কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। ‘কোল্ডরিফ’, ‘রেসপিফ্রেস টিআর’ এবং ‘রিলাইফ’ নামে তিনটি কাশির ওষুধের ব্যবহার নিয়ে বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি করা হয়েছে।