Advertisement
E-Paper

কিষেণজির ভাই বেণুগোপাল? না কি ‘দলিত মুখ’ তিরুপতি? হত মাওবাদী নেতা কেশবের উত্তরসূরি-জল্পনায় দু’টি নাম

ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মাওবাদী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাওয়ের মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরি পদে উঠছে দু’টি নাম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ১৮:২৯
After death of Nambala Keshava Rao alias Basavaraj, who will head the CPI (Maoist) next

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ঘটনাচক্রে তাঁরা দু’জনেই আদতে তেলঙ্গানার করিমনগর জেলার বাসিন্দা। নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর পলিটব্যুরো সদস্য। বুধবার ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের নারায়ণপুর জেলার জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ২৮ জন সঙ্গী-সহ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ ওরফে গগন্নার মৃত্যুর পরে তাঁর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে উঠে আসছে প্রথম সারির ওই দুই নেতার নাম।

প্রথম জন, নিহত মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির ভাই মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি ওরফে বিবেক ওরফে অভয় ওরফে সোনু। দ্বিতীয় জন, মাওবাদী সংগঠনের ‘দলিত মুখ’ হিসেবে পরিচিত থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেবুজি। নিরাপত্তাবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের জেরে নিহত এবং আত্মসমর্পণ করেছেন মাওবাদী সংগঠনের বহু প্রথম সারির নেতা। পলিটব্যুরোর ‘জীবিত ও সক্রিয়’ সদস্যের সংখ্যা নেমে এসেছে তিনে। সোনু এবং দেবুজি তাঁদেরই অন্যতম। মাওবাদী সশস্ত্র বাহিনী পিএলজিএ-র (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি) চালিকাশক্তি তাঁরাই।

২০১৯ সাল থেকেই সিপিআই (মাওবাদী)-এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতির কোনও খোঁজ নেই। তিনি এখন জীবিত কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির। এই পরিস্থিতিতে সোনু এবং দেবুজি ছাড়া আর এক পলিটব্যুরো সদস্য মিসির বেসরা ওরফে ভাস্কর ওরফে সুনির্মল ‘সক্রিয়’ বলে মাস কয়েক আগে একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা-রাঢ়বঙ্গ নিয়ে গঠিত মাওবাদী ‘ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরো’র দায়িত্বে। একদা বেণুগোপালের দাদা কিষেণজি এই পদে ছিলেন। ২০১১ সালের নভেম্বরে লালগড়ের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

ঘটনাচক্রে, চলতি বছরের গোড়ায় মাওবাদী উপদ্রুত রাজ্যগুলিতে নিরাপত্তাবাহিনীর নতুন করে অভিযান শুরুর পরে আত্মসমর্পণকারী নেতানেত্রীদের তালিকায় রয়েছেন সোনুর স্ত্রী দণ্ডকারণ্য জোনাল কমিটির নেত্রী বিমলা চন্দ সিদাম ওরফে তারাক্কা। তা ছাড়া গত মাসে সোনুর নাম করে একটি ‘শান্তিবার্তা’ এসেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। তাতে জানানো হয়েছিল, হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত মাওবাদী পলিটব্যুরো বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রের সরকারকে শান্তি আলোচনা এবং সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তেলুগু ব্রাহ্মণ নেতা সোনুর বদলে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে দলিত মাদিগা জনগোষ্ঠীর নেতা তিরুপতি সংগঠনের অন্দরে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।

২০১০ সালের এপ্রিলে ছত্তীসগঢ়ের দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী গেরিলাদের হামলায় সিআরপিএফের ৭৪ জন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। তিরুপতি ছিলেন সেই নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী। বস্তুত, কেশব সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে মাওবাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের দায়িত্ব ছিল ৬২ বছরের এই পিএলজিএ অধিনায়কের কাঁধে। অন্য দিকে, ৭০ বছরের বেণুগোপাল মূলত সংগঠনের আর্থিক এবং তাত্ত্বিক দিকটি সামলাচ্ছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন, অস্ত্র না ছাড়লে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করা হবে। এই আবহে আগামী দিনে মাওবাদীরা কোন পথে হাঁটবে, কেশবের উত্তরসূরি নির্বাচনেই তার দিশা মিলতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।

Nambala Keshava Rao Basavaraju Kishenji Maoist Leader CPI Maoist CPI-Maoist Maoists Maoist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy