Advertisement
E-Paper

বিজেপি ছেড়ে আপে যেতে গিয়ে ‘শহিদ’ সিধু

নিজের ফেলা গুগলিতেই এখন ফেঁসে গিয়েছেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। বিজেপি নেতাদের বিঁধে পঞ্জাবের জন্য ‘শহিদ’ হওয়ার তাস খেলে এখন অরবিন্দ কেজরীবালের আরও কাছে আসার চেষ্টা করছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ২০:৫৮

নিজের ফেলা গুগলিতেই এখন ফেঁসে গিয়েছেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। বিজেপি নেতাদের বিঁধে পঞ্জাবের জন্য ‘শহিদ’ হওয়ার তাস খেলে এখন অরবিন্দ কেজরীবালের আরও কাছে আসার চেষ্টা করছেন তিনি।

আম আদমি পার্টির ভরসায় গত সপ্তাহে আকস্মিক রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সিধু। এক সপ্তাহ নীরব থাকার পর তিনি আজ প্রকাশ্যে এসে বললেন, কেন তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু আজও তাল ঠুকে বলতে পারলেন না, তাঁর পরের গন্তব্য আম আদমি পার্টি। আর পঞ্জাবে সে দলের মুখ হতে চলেছেন তিনিই। কারণ, আম আদমি পার্টি সূত্রের খবর, আপ-এর সংবিধানে লেখা আছে, এক পরিবারের দু’জন ভোটে লড়তে পারবেন না। ফলে সিধু ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই যে আপের পথে পা বাড়াচ্ছিলেন, তাতে প্রথম বাধা। আরও বড় ধাক্কা হল, সিধুর বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা থাকায় কেজরীবাল এখনও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে তুলে ধরতে ইতস্তত বোধ করছেন।

সে কারণে অরবিন্দের আস্থা অর্জনের জন্য তিনি গত সপ্তাহে ইস্তফা দেওয়ার পর আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতাদের। বললেন, একসময় অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁকে অমৃতসর থেকে ভোটে লড়তে বলেছিলেন। অনেক প্রতিকূল অবস্থাতেও তার পর চার বার তাঁর জন্য ভোটে জিতেছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে পঞ্জাব ছেড়ে দিল্লি ও হরিয়ানা থেকে লড়তে বলা হয়। কিন্তু ভোটে লড়েননি, তবু তিনি পঞ্জাব ছাড়েননি। একসময় তাঁর রাজনৈতিক ‘গুরু’ অরুণ জেটলিকে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি অমৃতসরের আসনটি ছেড়ে (জেটলির জন্য) দিলেও মোদী হাওয়াতে তাঁকেও ডুবতে হয়েছে। আর রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কারণ হিসেবে সিধু বলেছেন, ‘‘আমি ছেড়েছি, কারণ আমাকে রাজ্যসভা দিয়ে বলা হয়েছিল পঞ্জাব থেকে দূরে থাকতে হবে। পাখিও দিনের শেষে নিজের বাসায় ফিরে আসে। কোনও দল, কোনও স্বার্থ পঞ্জাবের থেকে বড় হতে পারে না।’’

আরও পড়ুন: ‘আমার অপরাধটা কোথায়?’ বিজেপি-র দিকে আঙুল তুললেন সিধু

এই কথা বলে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, পঞ্জাবের সেরা মুখ তিনিই। এবং বিজেপি সে কাজটি তাঁকে করতে দেয়নি বলেই তিনি আজ বিজেপির থেকে দূরে থেকেছেন। যে দিন ইস্তফা দিয়েছিলেন, সে দিনও অরবিন্দ কেজরীবাল তাঁকে ‘সাহসিকতা’র জন্য ‘স্যালুট’ জানিয়েছিলেন। আজও সিধুর সাংবাদিক সম্মেলনের পর কেজরীবাল টুইট করে বলেছেন, ‘‘সিধু পঞ্জাবের ড্রাগ সমস্যা নিয়ে বলতে যাওয়ায় বিজেপি বাধা দিয়েছিল। বিজেপি কাকে আড়াল করছে? মারাত্মক।’’ কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গেল, এখনও পর্যন্ত সিধুও যেমন আপে যাওয়া নিয়ে মৌন, তেমনই নীরব কেজরীবালও। অথচ গত সপ্তাহে সিধুর পদত্যাগের পরই তাঁর স্ত্রী ঘটা করে বলে এসেছেন, আম আদমি পার্টিতে গিয়ে সেবা করা ছাড়া সিধুর আর কোনও উপায় নেই। রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ মানেই তিনি বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছেন। ফলে বিজেপিতে আর ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।

বিজেপি নেতৃত্ব এখন গোটা ঘটনায় মজা দেখছেন। দলের এক নেতার কথায়, সিধু ও তাঁর স্ত্রী, দু’জনের আপ থেকে ভোটে লড়বার প্রশ্ন নেই। আর যদি সিধুকে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর মুখ না করে শুধুমাত্র তারকা প্রচারক হিসেবে ব্যবহার করেন কেজরীবাল, তা হলে এত ঢাকঢোল পিটিয়ে পদত্যাগেরই বা কী প্রয়োজন ছিল? এক জন সাংসদ থেকে শুধুমাত্র বিধায়ক হওয়ার জন্য নিশ্চয়ই তিনি বিজেপি ছাড়লেন না। আর রাজ্যসভা দেওয়ার সময়েই যদি তাঁকে বলা হত পঞ্জাবে না যেতে, তা হলে তিনি এই পদ গ্রহণ করে দু’মাস থেকে গেলেন কেন? বিজেপি সূত্রের মতে, আসলে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ পর্যন্ত সিধু অপেক্ষা করছিলেন তাঁকে সেখানে নেওয়া হয় কি না। কিন্তু অকালির আপত্তিতে সেটি করেননি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সিধুর মতো পার্ট-টাইম রাজনীতিককে কেজরীবাল কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন, সেটাই দেখার। মুখ্যমন্ত্রী পদ না দিলে সিধুকে তা হলে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে সংসদে ফের প্রবেশ করতে পারেন।

Navjot Singh Sidhu BJP AAP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy