Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Haryana Clash

হরিয়ানায় শান্তির ডাক আমেরিকার

হরিয়ানার আঁচ পড়েছে পড়শি রাজস্থানে‌ও। অলওয়ার জেলার ভিওয়াড়ি শহরে মাংসের একটি দোকানে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

Haryana Violence

জ্বলছে দোকান। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৮:২৭
Share: Save:

মণিপুরের পরে এ বার হরিয়ানার গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়েও মুখ খুলল আমেরিকা। জো বাইডেন প্রশাসনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হরিয়ানায় ‘শান্তির ডাক’ দেওয়ার পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক তার প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, মণিপুর প্রসঙ্গের
মতো হরিয়ানার ঘটনাকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেয়নি সাউথ ব্লক।

গত কাল আমেরিকান বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘‘আমরা বরাবরের মতোই শান্তি বজায় রাখা ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে হিংসাত্মক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকার আর্জি জানাচ্ছি।’’ মুখপাত্র এ-ও বলেছেন, হরিয়ানার সংঘর্ষে কোনও আমেরিকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে এখনও তাঁদের জানা নেই। তাঁরা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী আজ বলেন, ‘‘শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যা ব্যবস্থা নেওয়ার, নিয়েছেন। আমেরিকান সময়ের ২ অগস্ট তারিখে মন্তব্যটি করা হয়েছে। সেটি আমরা দেখেছি। আমরা অবশ্যই চাই, যথাসম্ভব স্বাভাবিক অবস্থা ফিরুক। সেই লক্ষ্যেই কাজ হচ্ছে।’’ আগামী মাসেই ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। তার প্রেক্ষিতে হরিয়ানার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অরিন্দম বলেন, ‘‘আমরা অবশ্যই চাইব জি-২০-র আগে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরুক। সেটিই নিশ্চিত করা হবে। আশা করা যায়, সফল জি-২০ দেখতে পাব আমরা।’’

হরিয়ানার আঁচ পড়েছে পড়শি রাজস্থানে‌ও। অলওয়ার জেলার ভিওয়াড়ি শহরে মাংসের একটি দোকানে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত আজ আক্রমণ করেছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরকে। রাজস্থানের দুই যুবককে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত স্বঘোষিত গোরক্ষক মনু মানেসরের নাম হরিয়ানার হিংসার সূত্রেও উঠে এসেছে। খট্টর বলেছিলেন, মানেসরকে গ্রেফতার করতে কোনও বাধা নেই রাজস্থান পুলিশের। কিন্তু টুইটারে গহলৌতের অভিযোগ, হরিয়ানা পুলিশ সাহায্যই করছে না রাজস্থানকে।

খট্টরের দাবি, মনু কোথায়, তাঁরা জানেন না। অথচ একটি চ্যানেলে ভিডিয়ো কলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মনু। ‘জয় গোমাতা, জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে তিনি বলেছেন, জোড়া খুনের ঘটনার চার্জশিটে তাঁর উল্লেখ নেই এবং তিনি আদৌ ফেরার নন। ওই ঘটনার দিন তিনি গুরুগ্রামের একটি হোটেলে ছিলেন। কার্যত যে ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’ থেকে হরিয়ানায় অশান্তির সূত্রপাত, মনু তাতে যোগ দেবেন বলে জানিয়ে আগাম একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গে মনুর বক্তব্য, ‘‘আমি ওই ভিডিয়োতে কোনও উস্কানিই দিইনি। কোনও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আমাদের কর্মকর্তারা বারণ করায় আমি শোভাযাত্রাতেও যাইনি।’’

হরিয়ানায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি এখনও জারি। নুহ জেলায় গত কালও একটি ধর্মস্থান পুড়েছে। গণপ্রহারের শিকার হয়েছেন দুই যুবক। তবে কেউ হতাহত হননি। সেই নুহতেই গত সোমবার মারমুখী জনতার হাত থেকে কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জলি জৈন, তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যা এবং দেহরক্ষী। এফআইআর বলছে, সে দিন দুপুর ২টো নাগাদ নলহারের এসকেএম মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওষুধ কিনে ফেরার পথে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ঘিরে ধরেছিল ১০০-১৫০ জনের ভিড়। গাড়িতে ইট পড়ে, গুলিও চালানো হয়। গাড়ি ফেলে একটি বাসস্ট্যান্ডের ওয়ার্কশপে লুকিয়ে পড়েছিলেন চার আরোহী। কয়েক জন আইনজীবী এসে উদ্ধার করেছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটকে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটের সেই গাড়ি পুড়ে ছাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE