Advertisement
০৩ মে ২০২৪

‘হোক আলিঙ্গন’, রাহুলের পরে এ বার রাস্তায় কংগ্রেস

কংগ্রেস সূত্র বলছে, নরেন্দ্র মোদীর অন্তরে এত রাগ, এত ঘৃণা— মাস কয়েক আগেই রাহুল গাঁধী ভেবে রেখেছিলেন এই মানুষটিকে একটু আলিঙ্গন করা দরকার। লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের দিন সে কাজটি করেই ফেললেন রাহুল। এ বারে পথে পথেও চেনা-অচেনা পথচারীকে আলিঙ্গন করতে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্রি-হাগ’ বা ‘হোক আলিঙ্গন’।

দিল্লিতে ‘হোক আলিঙ্গন’। বুধবার। ছবি: ফেসবুক

দিল্লিতে ‘হোক আলিঙ্গন’। বুধবার। ছবি: ফেসবুক

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

আমিও মানুষ, আপনিও মানুষ। ঘৃণা সরিয়ে চলুন ভালবাসা বাড়াই। বৃষ্টিভেজা দিল্লির কনট প্লেসে এই কথা বলেই খতীব খানকে জড়িয়ে ধরলেন অনিরুদ্ধ শর্মা। একেবারে ‘হোক আলিঙ্গন’!

কংগ্রেস সূত্র বলছে, নরেন্দ্র মোদীর অন্তরে এত রাগ, এত ঘৃণা— মাস কয়েক আগেই রাহুল গাঁধী ভেবে রেখেছিলেন এই মানুষটিকে একটু আলিঙ্গন করা দরকার। লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের দিন সে কাজটি করেই ফেললেন রাহুল। এ বারে পথে পথেও চেনা-অচেনা পথচারীকে আলিঙ্গন করতে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্রি-হাগ’ বা ‘হোক আলিঙ্গন’।

আজই দিল্লিতে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাহুল বলেন, ‘‘বিজেপি সাংসদরা আমাকে দেখে একটু দূরে সরে থাকছেন। ভাবছেন, এই যদি আলিঙ্গন করি!’’ রাহুলের কথায়, বিজেপি ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক লড়াই রয়েছে, কিন্তু ঘৃণার সম্পর্ক কেন থাকবে? তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের জাতীয়তা, আমাদের ধর্ম তো মানুষকে ঘৃণা করতে শেখায় না। আমি আডবাণীজিকে আলিঙ্গন করেও তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি!’’

আজ শুরুর দিন। তবে কোনও শেষ দিন নেই। আজ হয়েছে দিল্লিতে। সে’টি ছড়ানো হচ্ছে রাজ্যে-রাজ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও উঠবে ঝড়। হাতে পোস্টার নিয়ে কংগ্রেস কর্মীরা বলছেন, ‘‘আলিঙ্গন ভালবাসার বার্তা ছড়ায়। প্রধানমন্ত্রীকে আলিঙ্গন করে রাহুল সে পথ দেখিয়েছেন। মানুষকে আমরা বলছি, সবাই আমরা ভালবাসা নিয়ে একসঙ্গে থাকতে পারি।’’ খতীব খানও বললেন, ‘‘রোজ গণপিটুনি হচ্ছে। আতঙ্কের পরিবেশ চার দিকে। দেশ পিছনে হাঁটছে। এই প্রচার ভালবাসা ছড়াবে। সেটা খুবই দরকার!’’

লোকসভা ভোটের আগে মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ ঘুরে ঘুরে জনসম্পর্ক অভিযান করছেন। দলের নেতাদেরও বলছেন। কিন্তু মোদীকে আলিঙ্গন করে রাহুল এখন নতুন মাপকাঠি তৈরি করে ফেলেছেন। যুবকদের মধ্যে তা গ্রহণযোগ্য তো হচ্ছেই, সমাজে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে মোদী বিরোধিতার অস্ত্রেও শান দিতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রীকে আলিঙ্গন করার সময়ে মোদী যেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন, রাহুলের নতুন অভিযানে বিজেপিরও ঠিক সেই অবস্থা। এখন যুবকদের কাছে টানতে মোদী-শাহকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। যুব-মোর্চার একটি অনুষ্ঠানে এ দিন অমিত শাহ বলেন, ‘‘খেলায় হারজিত আছে। হারলে জেতার খিদেটা আরও বাড়ে।’’ প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ হারের কথা কেন বললেন অমিত? ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে?

বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্‌হাও বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আলিঙ্গন করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে রাহুলের উষ্ণ আলিঙ্গন যুবকদের মন কেড়েছে।’’ কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ‘‘এক বার আলিঙ্গনে রাহুল নিজেও থামবেন না। আরও হতে পারে। আপাতত গোটা দেশে আলিঙ্গনে প্রেমের বার্তা ছড়াবে কংগ্রেস।’’ এ প্রচারে খরচ নেই, অথচ ভালবাসার বার্তা আছে। রাহুলের নিজস্ব ব্র্যান্ড যেমন আছে, মোদীর বিরুদ্ধে কড়া বার্তাও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE