Advertisement
E-Paper

শান্তিচুক্তির পরেই মণিপুরে নতুন করে অভিযানে আধাসেনা, তিন জেলায় ধৃত পাঁচ মেইতেই জঙ্গি

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, শুক্রবার ভোর থেকে তিন জেলায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী প্রিপাকের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে দু’জন মহিলা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:১৮
মণিপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

মণিপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী। —ফাইল চিত্র।

মেইতেইদের সংগঠনগুলির আপত্তি অগ্রাহ্য করে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে দুই কুকি জঙ্গিগোষ্ঠী ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন এবং ইউনাইটেড পিপল্‌স ফ্রন্ট-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বছরের জন্য সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরেই ইম্ফল উপত্যকায় মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে অভিযানের তীব্রতা বাড়াল আধাসেনা।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, শুক্রবার ভোর থেকে তিন জেলায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী প্রিপাকের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে দু’জন মহিলা। উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর অস্ত্র ও বিস্ফোরক। ইম্ফল পূর্ব, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর থেকে ধৃত ওই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভীতিপ্রদর্শনের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মণিপুরে আসতে চলেছেন। তার আগে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপিশাসিত রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফেরাতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেই অশান্তির সূত্রপাত হয় সেখানে। হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে জনজাতি গোষ্ঠীর কুকিরা পথে নামলে শুরু হয় হিংসা। গত আড়াই বছরের গোষ্ঠীহিংসার দুশোর বেশি মানুষের মৃত্যু এবং ৫০ হাজার ঘরছাড়া হলেও এখনও পর্যন্ত মণিপুরে যাননি প্রধানমন্ত্রী, যা নিয়ে বারে বারেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।

মণিপুরের জনজাতি অধ্যুষিত পার্বত্য জেলাগুলি কার্যত এখন রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহকে কার্যত পাশ কাটিয়ে কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে কেন্দ্র চুক্তি করেছে বলে মেইতেইদের একাংশের অভিযোগ। মণিপুরের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার জন্য আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের শর্ত ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে চুক্তির নতুন খসড়ায়। অর্থাৎ, এর পর সংঘর্ষবিরতিতে থাকা জঙ্গিরা মণিপুর ভেঙে পৃথক কুকিল্যান্ড গঠনের দাবি তুলতে পারবে না। এর পরে কুকি-জ়ো কাউন্সিল ঘোষণা করেছে, এখন থেকে যাত্রী ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অবাধ চলাচলের জন্য ২ নম্বর জাতীয় সড়ক খুলে দেওয়া হবে। নিরাপত্তাবাহিনী যাতে শান্তি বজায় রাখতে পারে, সেই প্রচেষ্টায় তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

সংশোধিত চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, সংঘাতপ্রবণ এলাকা থেকে সাতটি শিবির সরিয়ে নেবে কুকি জঙ্গিদের দুই যৌথ মঞ্চ। শিবিরের সংখ্যাও কমানো হবে। সংঘর্ষে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ বারবার উঠেছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, সব অস্ত্র নিকটবর্তী কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবিরে দিতে হবে। নিরাপত্তাবাহিনী কুকি জঙ্গিদের খুঁটিয়ে পরীক্ষা করবে। তাদের মধ্যে কোনও বিদেশি নাগরিক থাকলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। শিবিরগুলির উপর নজর রাখা হবে। ভবিষ্যতে নিয়মভঙ্গ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে চুক্তি পুনর্বিবেচনাও করা হবে। ঘটনাচক্রে, তার পরেই সমতল এলাকায় নতুন করে অভিযানে নামল আধাসেনা।

Manipur Violence Manipur Protest Manipur Meitei Kuki Militants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy