E-Paper

নতুন বিলে হিন্দি চাপানোর অভিযোগ, রাষ্ট্রদ্রোহ নিয়ে শঙ্কা

দক্ষিণের ওই দলের বক্তব্য, সংবিধান সংশোধন না করে ঘুরপথে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে এই সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ০৬:২৫
P.Wilson.

ডিএমকে সাংসদ পি উইলসন। ছবি: সংগৃহীত।

দেশের আইনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে গতকাল তিনটি বিল এনেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম—নামে আনা তিনটি বিলের শিরোনামে কোনও ইংরেজি শব্দের উল্লেখ নেই। যা আসলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে দাবি করে সরব হয়েছে দক্ষিণের দল ডিএমকে। যদিও ওই যুক্তি মানতে অস্বীকার করেছে সরকার।

গতকাল বাদল অধিবেশনের শেষ দিনের শেষ প্রহরে ওই তিনটি বিল নিয়ে আসে সরকার। অমিত শাহ জানান, ইন্ডিয়ান পেনাল কোড(ভারতীয় দণ্ডবিধি), ক্রিমিনাল প্রসিজ়িয়র কোড (ফৌজদারি দণ্ডবিধি), (১৮৯৮), ১৯৭৩ ও ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট-এই আইনগুলি শতাব্দী প্রাচীন। তাই আইনব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করে তোলার লক্ষ্যেই নতুন তিনটি বিল আনা হচ্ছে। কিন্তু ওই বিলে যেমন রাষ্ট্রদ্রোহের কঠোর সাজার সুপারিশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা, তেমনি অভিযোগ উঠেছে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ারও।

আজ ডিএমকে সাংসদ পি উইলসন সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘‘গোটা ভারতের প্রচলিত ভাষা হল ইংরেজি। কিন্তু প্রতিটি বিলের শিরোনাম হিন্দিতে করা হয়েছে। এতে অনেকেরই বুঝতে সমস্যা হবে। তাই বিলগুলির শিরোনাম অন্তত ইংরেজিতে করা হোক। জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। তা অসংবিধানিক।’’ দক্ষিণের ওই দলের বক্তব্য, সংবিধান সংশোধন না করে ঘুরপথে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে এই সরকার।

বিজেপির ওই প্রচেষ্টা দেশের ঐক্যের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের বৈচিত্র্যকে নষ্ট করার প্রশ্নে এ হল বিজেপি সরকারের ঔদ্ধত্যপূর্ণ পদক্ষেপ। বিলের শিরোনাম হিন্দি ভাষায় করার মধ্যে দিয়ে ভাষাগত সাম্রাজ্যবাদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তামিল শব্দটি উচ্চারণ করার কোনও নৈতিক অধিকার রইল না। হিন্দি ভাষা চাপিয়ে আমাদের পরিচয়কে মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টার সর্বাত্মক বিরোধিতা করা হবে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উত্তর, ‘‘একটি শব্দও হিন্দি নয়।’’ তিনি এর ব্যাখ্যা না দিলেও বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, বিলের নামের শব্দগুলির উৎস সংস্কৃতে। ফলে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যা ঠিক নয়।

এ দিকে নতুন আইনে তদন্তের স্বার্থে কোনও ব্যক্তিকে ৬০-৯০ দিন পুলিশ বা তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে রাখার কথা বলা হয়েছে। যা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যসভা সাংসদ কপিল সিব্বল। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশের ব্যবহার আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা। বিজেপি ক্ষমতায় এলেই সে দলের রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাদের পুলিশের অত্যাচারের সামনে পড়তে হয়। এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে তদন্তের স্বার্থে ৬০-৯০ দিন হেফাজতে রাখার আইন বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এক দিকে পুলিশের ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে, অন্য দিকে রাষ্ট্রদ্রোহের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে নতুন আইনে কোন কারণে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হতে পারে তা স্পষ্ট করা হয়নি। যা উদ্বেগজনক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amit Shah DMK

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy