কেউ বাড়ি বিক্রি করে, কেউ জমি, কেউ আবার গয়না এবং সঞ্চয়ের সর্বস্ব দিয়ে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন বেশি টাকা উপার্জনের আশায়। কিন্তু অবৈধবাসী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আবার ফিরতে হল দেশেই। তেমনই হরিয়ানার করনালের বাসিন্দা। ১০ মাস আগেই হরিয়ানা থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন তিনি। অবৈধবাসী ভারতীয়দের তালিকায় রয়েছেন তিনিও।
পরিবারের দাবি, বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আকাশ। বিশেষ করে আমেরিকা ছিল তাঁর পছন্দের জায়গা। আর তাই জেদ ধরেন রোজগারের জন্য আমেরিকাতেই যাবেন। শেষমেশ তাঁর জেদের কাছে হার মানে পরিবার। আড়াই একর জমি বিক্রি করে দেয় তারা। সেই জমি বিক্রি করে ৬৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন আকাশেরা।
আকাশের দাদার দাবি, ভাইকে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য এক এজেন্টকে ৬৭ লক্ষ টাকা দেন। সেই এজেন্ট তাঁদের জানান, ভিসা-সহ সমস্ত নথিপত্র প্রস্তুত করে রাখবেন। সেই সমস্ত নথি আকাশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই নথি নিয়েই আমেরিকার উদ্দেশে রওনা হন দশ মাস আগে। কিন্তু গত ২৬ জানুয়ারি মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করতে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে যান আকাশ। কাজের খোঁজে আমেরিকায় এজেন্ট ধরেন অনেকেই। সেই এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ঘুরপথে আমেরিকায় অবৈধ ভাবে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। আকাশ জানিয়েছেন, নানা ঘুরপথে, কখনও জঙ্গল পেরিয়ে, কখনও জলপথে, কখনও আবার সড়কপথে মেক্সিকোয় পৌঁছন। মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করতেই ধরা পড়ে যান। আকাশের দাদা শুভম জানিয়েছেন, মোট ৭২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে ভাইয়ের আমেরিকা সফরের জন্য। কিন্তু অবৈধ ভাবে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেটা পরিবারের কেউই জানতেন না। কাজের খোঁজে গিয়ে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হল বলেই জানিয়েছেন আকাশ।
আরও এক অবৈধবাসী ভারতীয় পঞ্জাবের জসপাল আমেরিকা যাওয়ার জন্য এজেন্টকে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, এজেন্ট তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। গত বছরের জুলাইয়ে বিমানে ব্রাজিলে যান তিনি। তার পর সেখান থেকে আমেরিকায় বিমানে করে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তা না করে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পার করানো হয়েছিল তাঁদের কয়েক জনকে। ছ’মাস ব্রাজিলে থাকার পর আমেরিকার সীমান্ত পার করেন। কিন্তু সীমান্তেই ধরা পড়ে যান। তার পর ১১ দিন জেল খাটতে হয়েছে। জসপাল বলেন, ‘‘জানতে পারিনি যে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ভেবেছিলাম অন্য কোনও ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ জানাল আমাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’’