আমেরিকার থেকে বুধবারই বিমানে করে প্রথম দফায় ফেরত পাঠানো হয়েছে ১০৪ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে। বুধবার বিকেলে পঞ্জাবের অমৃতসরে অবৈধবাসীদের দলটিকে নিয়ে নামে আমেরিকার সি-১৭ বিমান। সেই অবৈধবাসীদের মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁরা যে আমেরিকায় অবৈধ ভাবে থাকছিলেন, সে বিষয়ে না কি জানতই না পরিবার। এমনই দাবি করছে আমেরিকাফেরত অবৈধবাসীদের অধিকাংশ পরিবার।
গুজরাতে ফেরা এক অবৈধবাসী ভারতীয়দের তালিকায় রয়েছেন নিকিতা পটেল। তিনি মেহসানার বাসিন্দা। নিকিতার বাবা কানুভাই পটেল ইন্ডিয়া টিভি টুডে-র কাছে দাবি করেছেন, তাঁদের কন্যা বাড়িতে বলেছিলেন যে, ইউরোপে বেড়াতে যাচ্ছেন। কিন্তু আমেরিকায় গিয়ে থাকা শুরু করেছিলেন, সেটা পরিবারের কাউকেই জানাননি। কানুভাইয়ের কথায়, ‘‘আমরা খবরটা শুনে চমকে উঠেছিলাম যে, আমাদের কন্যাকে আমেরিকায় গ্রেফতার করা হয়েছে অবৈধ ভাবে সেখানে থাকার জন্য।’’ কানুভাইয়ের দাবি, অনেক বার কথা হয়েছে কন্যার সঙ্গে, কিন্তু তিনি যে আমেরিকায় রয়েছেন, সে কথা জানাননি। সাংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন যে, অবৈধ ভাবে থাকার জন্য ভারতীয়দের একটি দলকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা। তার মধ্যে ৩৩ জন গুজরাতিও রয়েছেন। সেই তালিকায় নিজের কন্যা রয়েছেন, এ কথা শুনে আরও স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন।
কানুভাই জানিয়েছেন, বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পর চাকরি না পেয়ে ইউরোপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর কন্যা। দুই বন্ধুর সঙ্গে মাসখানেক আগেই বিদেশে গিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছেন বলেও জানিয়েছেন কানুভাই। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক পঞ্জাবি, গুজরাতি আমেরিকায় থাকেন। অনেক টাকা খরচ করে সেখানে যান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে পরিবারগুলি পথে বসবে এ বার।’’
আরও এক অবৈধবাসী কেতুল পটেল তাঁর ফ্ল্যাট বিক্রি করে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সুরাতে থাকতেন তিনি। তাঁর এক আত্মীয় জানিয়েছেন, কেতুল আমেরিকায় গিয়েছিলেন তাঁরা জানতেন না। কিন্তু আমেরিকায় গিয়ে অবৈধ ভাবে থাকাটা তাঁর উচিত হয়নি বলেও জানিয়েছেন কেতুলের ওই আত্মীয়। গান্ধীনগরের গোহিল পরিবারের আবার তিন সদস্য আমেরিকায় মাসখানেক আগে কাজের খোঁজে পাড়ি দিয়েছিলেন। তাঁদেরও পরিবারের একাংশের দাবি, কোথায় গিয়েছিলেন তাঁরা জানতেন না। আমেরিকাফেরত বেশির ভাগ অবৈধবাসী গুজরাতিদের পরিবারের দাবি, ঘরের লোক আমেরিকায় গিয়েছিলেন তারা জানতই না।
পুলিশ জানিয়েছে, যে ৩৩ জন গুজরাতি ফিরে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে ১৩ জন গান্ধীনগরের, ১০ জন মেহসানার, পাটানের ৪, অহমদাবাদ শহর, অহমদাবাদ গ্রামীণ, বরোদা গ্রামীণ, পেটলাড়, বনসকণ্ঠ এবং আঙ্কালেশ্বরের এক জন করে রয়েছেন ওই দলে।