বন্দে মাতরমের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে মঙ্গলবার আলোচনা চলছে রাজ্যসভায়। সংসদের উচ্চকক্ষে হওয়া এই আলোচনায় কেন্দ্রের তরফে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানান, বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম পশ্চিমবঙ্গে হলেও বন্দে মাতরমের আবেদন গোটা বিশ্বে রয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার লোকসভায় বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনায় কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা কেন বন্দে মাতরম নিয়ে বিতর্ক করছি? কারণ শীঘ্রই বাংলার নির্বাচন আসছে। সরকার চায়, আমরা যেন অতীত নিয়েই মগ্ন থাকি, কারণ তারা বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চায় না।” মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ উড়িয়ে দেন শাহ।
শাহ অবশ্য সরাসরি প্রিয়ঙ্কার নাম করেননি। তিনি বলেন, “কয়েক জন মনে করেন, বাংলায় ভোট আসছে বলে বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আসলে তারা বন্দে মাতরমের গরিমাকে নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত করতে চায়।” একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংযোজন, “এটা ঠিক যে, বন্দে মাতরমের স্রষ্টা বঙ্কিমবাবুর জন্ম হয়েছিল বাংলায়। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যখন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা আত্মগোপন করে থাকতেন , তখন তাঁরা বলতেন বন্দে মাতরম। এমনকি এখনও যখন আমাদের সেনা সীমান্তে বা অন্যত্র দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তারক্ষায় জীবন বিসর্জন দেয়, তখন তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় বন্দে মাতরম।”
আরও পড়ুন:
কংগ্রেসকে আক্রমণ করে শাহ দাবি করেন, তোষণের জন্য বন্দে মাতরমকে টুকরো না-করলে দেশ দু’টুকরো হত না। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস বন্দে মাতরম গানের একাংশ বাদ দিয়ে দিয়েছিল। মঙ্গলবার শাহ বলেন, “কংগ্রেস যদি তোষণের জন্য বন্দে মাতরমকে ভাগ না-করত, তা হলে দেশটা দু’টুকরো হত না। প্রধানমন্ত্রীর মতোই শাহও জরুরি অবস্থার জন্য কংগ্রেসকে তোপ দাগেন। দাবি করেন, জওহরলাল নেহরু থেকে গান্ধী পরিবারের বর্তমান সকলে বন্দে মাতরমকে ধারাবাহিক ভাবে অপমান করে চলেছেন।
বক্তৃতা করতে উঠে শাহের অভিযোগ খারিজ করে দেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কংগ্রেসই বন্দে মাতরমকে স্লোগান হিসাবে ব্যবহার করেছিল।” তার পরেই শাহের উদ্দেশে খড়্গে বলেন, “ইতিহাস বলছে, আপনারা সর্বদা স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং দেশাত্মবোধক গানের বিরোধিতা করেছেন।” মোদী এবং শাহকে বিঁধে খড়্গের সংযোজন, “জওহরলাল নেহরুকে অপমান করার কোনও সুযোগ ছাড়েন না প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও তা-ই করলেন।”