আর ন’ঘণ্টা নয়। কর্মচারীদের দৈনিক কাজের সময় আরও বাড়িয়ে দিল অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। এ বার থেকে অন্ধ্রের কর্মচারীদের দিনে সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ওভারটাইম’ (বাড়তি সময়ের কাজ)-এর সর্বোচ্চ সীমা। মেয়েদের কাজের নিয়মেও বদল আনা হয়েছে। অন্ধ্র সরকারের বক্তব্য, এই নতুন নিয়মের ফলে সে রাজ্যে বিনিয়োগকারীরা আরও সক্রিয় হবেন। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কাজের সুযোগও। অর্থাৎ, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মচারীরাই লাভবান হবেন। তাঁদের রোজগার বাড়বে। কিন্তু কাজের সময় বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে তুলোধনা করছে বিরোধীরা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্য ও জনসংযোগমন্ত্রী কে পার্থসারথি জানিয়েছেন, রাজ্যের শ্রম আইনে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্ধ্রের ক্যাবিনেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘যে ৫৪ নম্বর ধারায় দিনে ন’ঘণ্টা ডিউটির কথা বলা হয়েছে, সেটি ১০ ঘণ্টা করে দেওয়া হল। ৫৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, পাঁচ ঘণ্টা কাজের পর এক ঘণ্টা বিশ্রাম পেতেন কর্মচারীরা। সেই সময়সীমাও বাড়িয়ে ছ’ঘণ্টা করে দেওয়া হয়েছে।’’ শ্রম আইন অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশের কর্মচারীরা ৭৫ ঘণ্টার বেশি ‘ওভারটাইম’ করতে পারতেন না। সেই সময়সীমা বাড়িয়ে এখন ১৪৪ ঘণ্টা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:
কেন এই পরিবর্তন? মন্ত্রী বলেন, ‘‘শ্রম আইনের এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের রাজ্যের কারাখানাগুলিতে বিনিয়োগ বাড়বে। আরও বিনিয়োগকারী আসবেন। এই নতুন নিয়ম থেকে আসলে কর্মীদেরই লাভ হবে। বিশ্বায়ন তো সব রাজ্যেই হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রচলিত নিয়ম অন্ধ্রে বাস্তবায়নের জন্য আইন সংশোধন জরুরি।’’
মেয়েদের কাজের নিয়মেও বদল এনেছে অন্ধ্র সরকার। সে রাজ্যে রাতের ডিউটির ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। যা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, মহিলারা এত দিন অন্ধ্রপ্রদেশে রাতের ডিউটি করতে পারতেন না। সেই নিয়ম পাল্টে যাচ্ছে। এ বার থেকে মহিলারাও রাতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। তাঁদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্তও করবে সরকার। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আপনি যখন বাড়তি কাজ করেন, আপনার রোজগারও বাড়ে। এই নিয়মের ফলে মহিলাদের রোজগারও বেড়ে যাবে।’’ সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অন্ধ্রের সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কে রামকৃষ্ণা জানান, এই নতুন নিয়ম কর্মচারীদের স্বার্থের পরিপন্থী। তাঁর কথায়, ‘‘গত ১১ বছর ধরে মোদী সরকার বার বার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা শ্রমিকদের স্বার্থের বিরোধী।’’