ছত্তীসগঢ়ের বস্তার অঞ্চলে পুলিশের চর সন্দেহে ফের এক গ্রামবাসীকে কুপিয়ে খুন করলেন মাওবাদীরা। এ বারের ঘটনাস্থল বিজাপুর জেলা। বুধবার রাতে বিজাপুরের উসুর থানা এলাকার পূজারিকাঁকের গ্রামে বাসিন্দা মদকম ভীমার বাড়িতে চড়াও হন মাওবাদীরা। এর পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যান মাওবাদীরা। চলতি বছরে বস্তার অঞ্চলে (বিজাপুর-সহ সাত জেলা মিলিয়ে) এই নিয়ে ৩৮ জন সাধারণ গ্রামবাসী মাওবাদী হিংসার বলি হলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছোন স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা। ইতিমধ্যে ওই ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে পুলিশ জানতে পারে, বুধবার রাতে মাওবাদীরা চড়াও হন ওই ব্যক্তির বাড়িতে। মাওবাদীদের সন্দেহ ছিল, মদকম তাঁদের গতিবিধির বিষয়ে পুলিশের কাছে খবর দিতেন। সেই সন্দেহ থেকেই ওই সাধারণ গ্রামবাসীকে টানতে টানতে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন মাওবাদীরা। এর পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় মদকমকে।
বুধবার রাতেই বিজাপুরের পার্শ্ববর্তী সুকমা জেলায় মাওবাদী উপদ্রুত কিস্তারাম থানা এলাকায় সালটং গ্রামে একজন খুন হন। এক দল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি রাতে চ়ড়াও হন ৫৫ বছর বয়সি রাভা সোনার বাড়িতে। সেখানেও ওই ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে ডেকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। যদিও ওই ঘটনার সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থল থেকে মাওবাদীদের কোনও পোস্টারও পাওয়া যায়নি। তবে মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা হওয়ার কারণে সম্ভাব্য সব দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদী নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিক অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। দিন কয়েক আগে জানা যায়, ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায় আধাসেনা আরও ৩০টি ঘাঁটি খুলছে। শুধু তা-ই নয়, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে আরও গতি আনার কথাও জানিয়েছিল সিআরপিএফ। জঙ্গলযুদ্ধে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘কোবরা’ বাহিনীও মাওবাদী উপদ্রুত এলাকাগুলিতে সক্রিয় থাকবে বলেও জানানো হয়। এ অবস্থায় ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন প্রান্তে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের ঢল নেমেছে। অন্য দিকে চলছে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযানও।