স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য অনুব্রত মণ্ডলকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে ইডি। সংগৃহীত
মঙ্গলবার গভীর রাতে অনুব্রতর মণ্ডলকে হেফাজতে পাওয়ার পর কালক্ষেপ না-করে বুধবার সকাল থেকেই তাঁকে জেরা করা শুরু করে দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তারই মাঝখানে আধঘণ্টার জন্য অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে ফেরার পর আবার জেরা শুরু হয়েছে।
বুধবার বিকেলে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে আসার কথা তাঁর আইনজীবীর। বিচারকের নির্দেশেই অনুব্রতের আইনজীবী তাঁর সঙ্গে রোজ দেখা করতে পারবেন। জেরার সময়েও তাঁকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছিলেন অনুব্রতের আইনজীবী মুদিত জৈন। জেরার সময় ইডির আইনজীবীও হাজির থাকতে পারবেন। পুরো জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়াটি ভিডিয়োগ্রাফি করে রাখা হচ্ছে।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে গত বছরের অগস্টে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। নভেম্বরে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল ইডি। গরু পাচারের বিপুল টাকা কোথায় গেল, তা জানতে দিল্লিতে নিজেদের হেফাজতে রেখে ইডি এ বার অনুব্রতকে জেরা করতে চায়। সে কারণেই রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারকের কাছে তাদের আর্জি ছিল, ১৪ দিনের জন্য অনুব্রতকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে দেওয়া হোক। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে বিচারক রাকেশ কুমার দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে অনুব্রতকে ৩ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১০ মার্চ সকালে ফের অনুব্রতকে আদালতে হাজির করাবে ইডি। সেই সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থা গরু পাচারের বিপুল টাকা কোথায় গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে তা জানার চেষ্টা করবে। আদালতে এমনটাই দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী।
সেই জানতে চাওয়ার প্রক্রিয়া বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার ‘হোলি’ তথা ছুটির দিন হলেও ইডির অফিসারেরা অনুব্রতকে তাঁদের সদর দফতরে জেরা করা শুরু করেছেন। তবে বিচারক অনুব্রতের দৈনিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাই সকালের কিছু পরে তাঁকে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে আধঘণ্টা ধরে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে আবার অনুব্রতকে ইডির সদর দফতরে এনে জেরা করা শুরু হয়েছে।
অসমর্থিত সূত্রের খবর, অনুব্রতকে জেরা করার জন্য ছয় সদস্যের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। তাতে অভিজ্ঞ অফিসারদের রাখা হয়েছে। সরকারি ভাবে কেউই এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি। তবে ইডি সূত্রে এটা জানা গিয়েছে যে, গরু পাচারের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায়, কার কার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সেটা জানাই ইডির লক্ষ্য। ১০ তারিখ, শুক্রবার অনুব্রতকে আবার আদালতে হাজির করাতে হবে ইডির আধিকারিকদের। তার আগেই তাঁরা এই বিষয়ে যতটা সম্ভব কাজ এগিয়ে রাখতে চাইছেন। অনুব্রতকে জেরা করা হবে গরু পাচারের ‘প্রোটেকশন মানি’ নিয়েও। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, ওই টাকার বড় অংশ অনুব্রত এবং তাঁর পরিজনদের কাছে গিয়েছে। পাশাপাশিই রাইস মিল-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি নিয়েও জেরা করা হবে অনুব্রতকে।
গরু পাচার মামলায় এর আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রতের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। তাঁকে এবং অনুব্রতকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারেও ইডির একটি সূত্রের দাবি। অনুব্রত এবং সায়গলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে এনামুল এবং আব্দুল লতিফের থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy