পূর্ব লাদাখ সীমান্ত ‘স্বাভাবিক’ নয়। দ্ব্যর্থহীন ভাবে এই সত্য আজ মেনে নিলেন দেশের সেনাপ্রধান স্বয়ং। মঙ্গলবার সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েন প্রসঙ্গে বলেন, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) ‘স্থিতিশীল রয়েছে, কিন্তু স্বাভাবিক নেই’!
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমি কল্যাণ পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত উপদেষ্টাদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘চাণক্য ডিফেন্স ডায়লগ, ২০২৪’-এর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আজ সেনাপ্রধানের বক্তব্য, “বর্তমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েনে পারস্পরিক বিশ্বাসটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি।” তাঁর কথায়, “আমাদের এটা বুঝতে হবে যে, কূটনৈতিক স্তর থেকে সবার কাছে নানা মতামত এবং সূত্র পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু যখন সেগুলি কাজে করে দেখানোর সময় আসবে, তখন সেটা দু’তরফের সেনা আধিকারিকদেরই করতে হবে। ফলত এখনকার পরিস্থিতি হল— স্থিতিশীল, কিন্তু স্বাভাবিক নয় এবং স্পর্শকাতর।”
পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক নয়’ বলে কী বলতে চাইছেন সেনাপ্রধান? তাঁর কথায়, “আমরা চাইছি, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের আগে পর্যন্ত পরিস্থিতি ঠিক যেমনটা ছিল, সেই অবস্থা আবার ফিরে আসুক। তা সে ওই এলাকার সাধারণ পরিস্থিতি হোক, কিংবা বাফার জ়োনের পরিস্থিতি হোক অথবা টহলদারির বিষয় হোক। এখনও পর্যন্ত আগের পরিস্থিতি ফিরে আসেনি। আমরা যে কোনও আকস্মিক ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি।” সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। ইতিমধ্যেই ছোটখাটো কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে। ডেপসাং এবং ডেমচক-সহ নর্দান ফ্রন্টের সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছে।”
প্রসঙ্গত, দফায় দফায় আলোচনার পরও ডেপসাং এবং ডেমচক এলাকা নিয়ে ভারত ও চিনের মতভেদ এখনও পর্যন্ত কাটেনি। ফলে দুই পক্ষেরই ১০ হাজার করে সেনা তাদের অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে লাদাখে মোতায়েন রয়েছে। লেবাননে সাম্প্রতিক হিজ়বুল্লা-ইজ়রায়েল সংঘর্ষ নিয়ে সেনাপ্রধান দ্বিবেদী বলেন, ‘‘বিস্ফোরক পেজার ব্যবহার ইজ়রায়েলের মাস্টারস্ট্রোক ছিল। বছরের পর বছর ধরে প্রচুর পরিশ্রম ও গবেষণা করে ইজ়রায়েল যা করেছে, তা অতুলনীয়। যুদ্ধের শুরু হয় পরিকল্পনার স্তর থেকে। ইজ়রায়েল যা করছে তার পরিকল্পনাটাই ভিন্ন। হামাস তাদের মূল লক্ষ্য নয়, তাই প্রথমে তারা হামাসকে আক্রমণ করেছে। এখন তারা হিজ়বুল্লাকে নিকেশ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)