Advertisement
E-Paper

কঠিন পরীক্ষা জেটলির, আজ লক্ষ্য ভারসাম্যই

বাজেটের ব্রিফকেস থেকে অর্থমন্ত্রীকে এমন মন্ত্র বের করতে হবে, যাতে পা না ফস্কায়। ভারসাম্যের এই খেলায় উতরে যাওয়াটাই এ বার বাজেটে অর্থমন্ত্রীর একমাত্র চ্যালেঞ্জ।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৪
অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।

অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।

দড়ির উপর হাঁটার কেরামতি দেখাবেন নরেন্দ্র মোদী। পা যাতে ফস্কে না যায়, তা দেখার দায়িত্ব অরুণ জেটলির!

এক বছর পরেই ভোটের বাদ্যি বাজবে। তাই কেরামতি দেখিয়ে হাততালি কুড়োতে হবে মোদীকে। কিন্তু আয় আর ব্যয়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গাটায় পা পড়লেই, ধার-কর্জের কালো গর্তে ঢুকে যাবে অর্থনীতি।

সুতরাং বাজেটের ব্রিফকেস থেকে অর্থমন্ত্রীকে এমন মন্ত্র বের করতে হবে, যাতে পা না ফস্কায়। ভারসাম্যের এই খেলায় উতরে যাওয়াটাই এ বার বাজেটে অর্থমন্ত্রীর একমাত্র চ্যালেঞ্জ।

২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে কৃষক-গরিব-মধ্যবিত্তর মন জয়ে হাত উপুড় না করে উপায় নেই। ভাবতে হবে কৃষকদের সুরাহা, মধ্যবিত্তের জন্য কর ছাড়ের কথা। কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। ভোটের আগে ‘জনমোহিনী’ বাজেট তৈরির প্রলোভন যদি এড়িয়েও যান, অর্থনীতি চাঙ্গা করতে পরিকাঠামোয় খরচ করতেই হবে জেটলিকে। কারণ বেসরকারি লগ্নি এখনও দূর অস্ত্। এ বছরই বিজেপি-শাসিত রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশে ভোট। ‘উপহার’ রাখতে হবে তাদের জন্যও।

উল্টো দিকে রয়েছে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে দুশ্চিন্তা। অশোধিত তেলের দাম তলানিতে ঠেকার ফায়দা এত দিন কোষাগারে ঢুকেছে। কিন্তু তেলের দাম ফের বাড়ছে। জিএসটি থেকে আশানুরূপ আয় না হওয়ায় বেড়েছে ঘাটতির আশঙ্কা। ঘাটতি লাগামছাড়া হলে রেটিং সংস্থাগুলি চোখ রাঙাবে। তা হলে বিদেশি লগ্নি মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। বাড়বে জিনিসপত্রের দাম। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে চাইবে না।

প্রতি বারই ভোটের আগের বছর অর্থমন্ত্রীদের এই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। কিন্তু মোদী নিজেই তাঁর অর্থমন্ত্রীর পরীক্ষাটা আরও কঠিন করে দিয়েছেন। মুখে মোদী বলেছেন ‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স’-এর কথা। বাস্তবে সর্বত্র নাক গলিয়েছেন। নোট বাতিলের মতো ‘অ্যাডভেঞ্চার’ করতে গিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির গাড়ির চাকা ফুটো করেছেন। তার ফলে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। অথচ ২০২২-এর মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার ‘অবাস্তব’ স্বপ্ন দেখিয়ে, বিপুল প্রত্যাশা তৈরি করেছেন।

এই প্রত্যাশার ফানুসেই শেয়ার বাজার তুঙ্গে উঠেছে কি না, তা নিয়ে জোর বিতর্ক। শেয়ার বাজারের ‘বুদবুদ’ ফাটলে যে অর্থনীতির ফানুসও চুপসে যাবে, তা জেটলি ভালই জানেন। আবার ঘাটতি বাড়িয়ে, আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করলে শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।

তবে কিছু বিষয়ে জেটলি ভাগ্যবান। জিএসটি চালুর পর কর কমিয়ে-বাড়িয়ে দাম কমানো-বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তাঁর হাতে নেই। ফলে কাউকে চটানোর ঝুঁকিও নেই। পূর্বসূরিদের মতো শরিক দলকে খুশি করারও দায় নেই। কোষাগারের রাশ আলগা না-করে জনগণেশকে তুষ্ট করাই তাঁর একমাত্র পরীক্ষা।

Arun Jaitley Union budget Budget 2018 Narendra Modi অরুণ জোটলি বাজেট ২০১৮
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy