ক্ষমতা ধরে রেখে ঝাড়খণ্ডে নজির গড়লেন হেমন্ত সোরেন। এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রীই ভোটে জিতে পর পর দু’বার মসনদে বসেননি। শনিবার ভোটে জিতেই নিজের ‘শক্তি’ প্রদর্শন করলেন হেমন্ত। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেন ছোট্ট বার্তাও।
দাড়িভর্তি মুখে লেগে হাসির ছটা। তাঁকে জাপটে ধরে আছে এক পুত্র, পাশে বসে আর এক জন। দুই পুত্রের মুখেই খুশির হাসি! ঝাড়খণ্ডের মসনদ দখলের পর এই ছবিই পোস্ট করলেন হেমন্ত। সঙ্গে দু’টি শব্দ মাত্র— ‘আমার শক্তি’!
নির্বাচনের আগে একাধিক প্রশ্নে বিদ্ধ হয়েছিল হেমন্তের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশ— বহু কাঁটা বিছানো পথে হাঁটতে হয়েছে হেমন্তকে। প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ— বার বার নানা কাঁটায় বিদ্ধ করেছেন শিবু সোরেনের পুত্রকে। অনেক ভোট বিশেষজ্ঞও হেমন্তের ‘প্রত্যাবর্তন’ নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন। বুথফেরত সমীক্ষাও ছিল তাঁর বিপক্ষে। কিন্তু শনিবার ভোটগণনার দিন বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই ঝাড়খণ্ডের চিত্র পরিষ্কার হয়ে যায়। ঝাড়খণ্ডের মানুষ আবারও এক বার আস্থা রাখলেন হেমন্তের উপরে।
৮১ সদস্যের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ছিল ৪১টি আসন। সহযোগী কংগ্রেস, আরজেডি এবং বামদল সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-কে নিয়ে হেমন্তের দল ৫৬ ছুঁয়ে ফেলেছে। হেমন্তের দলের একার ঝুলিতেই ৩৪ আসন। সহযোগী কংগ্রেস ৩০টিতে লড়ে ১৬, আরজেডি সাতটিতে লড়ে চার এবং সিপিআইএমএল (লিবারেশন) চারটিতে লড়ে দু’টিতে জিতেছে। অন্য দিকে, ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। ৬৮টি আসনে লড়ে বিজেপির ঝুলিতে মাত্র ২১টি আসন এসেছে। ২০১৯ সালের তুলনায় আসন এবং ভোট দুই কমছে পদ্মশিবিরের।
আরও পড়ুন:
ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই উল্লাসে মেতে ওঠেন জেএমএম সমর্থকেরা। জমায়েত বাড়তে থাকে হেমন্তের বাড়ি সামনে। সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাসে গা ভাসানোর আগে নিজের দুই পুত্রের সঙ্গে ছবি পোস্ট করলেন হেমন্ত। বুঝিয়ে দিলেন তাঁর সমস্ত শক্তির উৎস কোথায়! অনেকের মতে, পাঁচ মাসের জন্য হেমন্তের জেলযাত্রা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র কাছে ‘শাপে বর’ হয়েছে।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। এ বার ভোটে জিতে ফের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন হেমন্ত।