আশিস কুমার মিশ্রকে কাছে পেয়ে আবেগতাড়িত বীণা দেবী। ছবি: সংগৃহীত।
পাশ করার খবরটা পেয়ে তা জানাতে স্কুলে ছুটে গিয়েছিলেন আশিস। ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছেন বলে কথা। তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। আর তাই তাঁকে গড়ে তোলার ‘কারিগর’দের কাছে সেই খবর জানাতে স্কুলে হাজির হন আশিস।
আশিসকুমার মিশ্র। বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা। এ বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় তাঁর র্যাঙ্ক ৫২। প্রাক্তন ছাত্রের স্কুলে আসার খবরটা আগেই পেয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষকরা। তাই আশিসকে স্বাগত জানাতে স্কুলের পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা প্রস্তুত ছিলেন। তাঁদের হাতেই তৈরি সেই স্বল্পভাষী, শান্ত আশিস যে দেশের এক জন আমলা হতে চলেছেন। তাই তাঁকে স্বাগত জানাতে কোনও রকম খামতি ছিল না স্কুলে।
আশিস হাজির হয়ে একে একে সমস্ত শিক্ষকের আশীর্বাদ নেন। পড়ুয়াদের তাঁর লড়াইয়ের কাহিনি শোনান। তাদের অনুপ্রেরণা দেন। কিন্তু এই সবের মাঝে একটি ঘটনাই সকলের মন কেড়ে নিয়েছে। আশিস যখন স্কুলে এসে পৌঁছন, তখন শিক্ষকরা সবাই একে একে তাঁকে আশীর্বাদ করছিলেন। তখন দূর থেকেই আর এক জন তাঁকে লক্ষ্য করছিলেন।
সেই ছোট্ট ছেলেটা আজ এক জন আইএএস আধিকারিক। যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন স্কুলের পরিচারিকা বীণা দেবী। সম্বিৎ ফিরে পেলেন আশিসের ডাকে। আশিস কিন্তু ভিড়ের মাঝেও বীণা দেবীকে লক্ষ করেছিলেন। দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বীণা দেবীর কাছে ধীর পায়ে এগিয়ে যান তিনি। তার পরই সকলকে একেবারে চমকে দিয়ে বীণা দেবীর পা ছুঁয়ে নমস্কার করে তাঁর আশীর্বাদ নেন।
আশিসের এই কাণ্ডে নিজেও একটু অপ্রস্তুতে পড়ে যান বীণা দেবী। তবে কিছুটা আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েন। আশিসকে আশীর্বাদ করেন তিনি। বীণা দেবী বলেন, “আমাদের গর্ব যে আশিস এই স্কুলের ছাত্র ছিল। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল এবং আদর্শ ছাত্র ছিল। আজ সেই ছেলে আইএএস আধিকারিক হয়েছে। ওর এই সাফল্যে আমি এবং পুরো স্কুল গর্বিত।” এর পরই বীণা দেবী বলেন, “আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এক জন আইএএস আধিকারিক এসে পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy