E-Paper

চড় সহযাত্রীর, বাড়ি ফেরেননি হাসনুল

হাসনুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, হাসনুল মুম্বইয়ের ভারত নগরে একটি জিমে কাজ করেন। এই প্রথমবার বাড়িতে ফেরার জন্য তিনি বিমানে টিকিট কাটেন। মুম্বই-কলকাতা সরাসরি বিমান না থাকায় গত কাল তাঁর প্রথম বিমানে কলকাতা আসার কথা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ১০:১১

—প্রতীকী চিত্র।

এটাই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম উড়ান। কিন্তু বিমান চলতে শুরু করতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অসমের কাছাড় জেলার কাটিগড়ার বাসিন্দা হাসনুল হক মজুমদার। দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন ছুটন্ত বিমানের মধ্যেই। বাধ্য হয়ে বিমান থামান চালক। বিমান সেবিকারা তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তখনই এক সহযাত্রীর সপাট থাপ্পড় আছড়ে পরে হাসনুলের গালে। এই ঘটনা বৃহস্পতিবার সকালের। কিন্তু তারপর ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও আর খোঁজ নেই হাসনুলের। ঘটনায় দিশাহারা তাঁর পরিবার।

হাসনুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, হাসনুল মুম্বইয়ের ভারত নগরে একটি জিমে কাজ করেন। এই প্রথমবার বাড়িতে ফেরার জন্য তিনি বিমানে টিকিট কাটেন। মুম্বই-কলকাতা সরাসরি বিমান না থাকায় গত কাল তাঁর প্রথম বিমানে কলকাতা আসার কথা ছিল। সেখান থেকে আসতেন শিলচরে। এর পরের ঘটনা আজ ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো দেখেই জানতে পারে লাঠিমারা এলাকায় থাকা তাঁর পরিবার। জানা যায়, বিমান ওড়ার প্রস্তুতি নিতেই আতঙ্কিত হাসনুল আসন ছেড়ে দৌড়ে যান। কাঁপতে থাকেন। বিমানকর্মীরা তাঁকে শান্ত করেন। কিন্তু সেই সময় একজন সহযাত্রী উত্তেজিত হয়ে চড়মারেন হাসনুলকে। তাতে কেঁদে ফেলেন ত্রস্ত হাসনুল।

বিমানের অন্য যাত্রীরা সকলেই ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানান ও চড় মারা যাত্রীকে বকাবকি করতে থাকেন। ঘটনাটি নিয়ে এ দিন ইন্ডিগো বিমান সংস্থা বিবৃতি দিয়ে বলে, ‘এই ধরণের ব্যবহার একেবারেই অবাঞ্ছিত। আমাদের যাত্রী বা কর্মীদের নিরাপত্তা বা সম্মানহানির কোনও ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের বিমানকর্মীরা নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ করেছেন। চড় মারা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে, কলকাতায় পৌঁছে নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’ এও জানা গিয়েছে, পরে হাসনুলকে শান্ত করে বসানো হয়। বিমানও ওড়ে। কিন্তু তারপর কোথায় গেলেন হাসনুল?

হাসনুলের বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত। ছেলের সঙ্গে হওয়া ঘটনা দেখে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর কাকা জানান, হাসনুলকে আনতে আজ সকালে তাঁরা শিলচরের কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দরে যান। তাঁর ফ্লাইটটি সকাল সওয়া ৮টায় অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু হাসনুল আসেননি! বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কেউই তখন কোনও সাহায্য করেনি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্য চাওয়া হলে তারা বলে বিমান সংস্থাকে ইমেল পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু তারপর কিছুই জানানো হয়নি। এ দিকে, উধারবন্দ থানায় এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা ডায়েরি না করে কাটিগড়া থানায় যেতে বলে। হাসনুলের কাকার ক্ষোভ, ‘‘আমাদের ছেলে কোথায় গেল তা নিয়ে এত ঘণ্টা পরেও কেউ জবাব দিচ্ছে না!’’

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এক্স হ্যান্ডলে ইন্ডিগোর উদ্দেশে লিখেছেন, চড় মেরেছেন যিনি তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হোক এবং দ্রুত ওই ব্যক্তিকে 'নো ফ্লাই লিস্ট'-এ পাঠানো হোক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Missing harassment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy