মুর্শিদাবাদের হিংসার নেপথ্যে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে বলে কিছু সূত্রে দাবি করা হয়েছিল। তা নস্যাৎ করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল বাংলাদেশ। সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের হিংসায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যে কোনও চেষ্টাকে আমরা দৃঢ় ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।’’
মুর্শিদাবাদের হিংসার দিকে নজর রয়েছে গোয়েন্দাদের। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ভূমিকাও। সূত্রের দাবি, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় খোলা সীমান্তের সুযোগ নিয়ে এ দেশে এসেছে। তার পরে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ভিড়ে মিশে হামলা চালিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, মূলত পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের কিছু স্থানীয় নেতার নির্দেশে ওই দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল। কিন্তু এক সময়ে নেতারাই আর ওই দুষ্কৃতীদের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। কার্যত সেই বিষয়টিই এ দিন খারিজ করে শফিকুল জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার ভারতে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার নিন্দা করছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’’ এক্স হ্যান্ডলেও একই কথা লেখেন
প্রেস সচিব।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল ও অস্থিরতার সময়ে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর উপরে হামলার ঘটনা নিয়ে ইউনূস সরকারের কাছে বার বার উদ্বেগ জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মুর্শিদাবাদের ঘটনার সূত্রে ইউনূস প্রশাসন একই ভাবে এ দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে পাল্টা সরব হওয়ার রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, ভারত-বাংলাদেশের খোলা সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মানব-পাচার, অনুপ্রবেশ, জাল টাকা ও ওষুধ পাচারের মতো অপরাধ হয়ে চলেছে। বিষয়গুলি নিয়ে একাধিক বার আলোচনার টেবিলে দুই দেশের কথা হয়েছে। যত দ্রুত এর সমাধান হবে, ততই মঙ্গল।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)