সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়
ক্রোমোজ়োমের এক ধরনের বিকৃতি। তার ফলেই জিন থেকে উৎপন্ন এক ধরনের প্রোটিনের অভাবে মস্তিষ্কের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। কখনও কখনও নানা ব্যবহারিক সমস্যাও দেখা দেয়। এমনই এক বিরল রোগের ক্ষেত্রে দিশা দেখিয়েছেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। ইঁদুরের উপরে দীর্ঘ সময়ব্যাপী গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন, জিনের উপরে কারিকুরি করে এই সমস্যা অনেকটাই মেটানো সম্ভব। এই বিরল রোগের উপরে দীর্ঘ গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন বাঙালি স্নায়ুবিজ্ঞানী সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বর্তমানে বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস-এ অধ্যাপক পদে রয়েছেন।
মানুষের এক্স-ক্রোমোজ়োমে পরিবর্তনের ফলে একটি রোগ দেখা যায়। একে বলা হয় ফ্রাজ়াইল এক্স-সিন্ড্রোম। বিজ্ঞানীদের মতে, ক্রোমোজোমে থাকা এফএমআর১ জিন থেকে এক ধরনের প্রোটিন নির্গত হয়। যা মানুষের মস্তিষ্কের গঠন এবং বৃদ্ধিতে সহায়ক। এক্স-ক্রোমোজ়োমে বিকৃতি দেখা দিলে সেই প্রোটিন উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। তার ফলে যে রোগ দেখা দেয় তাকেই ফ্রাজাইল এক্স-সিন্ড্রোম বলা হয়। পুরুষদের মধ্যেই এই রোগের প্রবণতা বেশি।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফ্রাজাইল এক্স-সিন্ড্রোম নিয়ে সংগঠন রয়েছে। তারা এ বারই প্রথম পুরস্কার প্রদান করেছে। স্নায়ুর বিভিন্ন দিক নিয়ে দীর্ঘকালীন গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে সুমন্ত্রবাবুকে তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই রোগের উপরে দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করছি। তবে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, সুমন্ত্রবাবু এর আগেও মানুষের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর নানা জটিল দিক তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি একমাত্র ভারতীয় হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর ফিজ়িয়োলজিক্যাল সায়েন্সেস-এর ‘ফেলো’ নির্বাচিত হয়েছেন। মনের ভয় কী ভাবে মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে এবং কী ভাবে দুর্ঘটনার স্মৃতি ভুলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যায় সে ব্যাপারেও তাঁর গবেষণা বিজ্ঞানী মহলে আলোড়ন ফেলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy