Advertisement
E-Paper

ফুটপাথ দখলদারের জন্য এল খাবার, শৌচালয়

রবিবার পঞ্চকুলায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে নীলাঞ্জনা জানালেন, গত শুক্রবার থেকেই সেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। মঙ্গলবারই অবশ্য পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ঠেকেছিল। ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের মামলার শুনানির জন্য পঞ্চকুলায় জড়ো হচ্ছেন তাঁর ভক্তকুল।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩৮
পঞ্চকুলার নীলাঞ্জনা ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চকুলার নীলাঞ্জনা ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

বাবাকে ফোন করে কেঁদে ফেলেছিলেন নীলাঞ্জনা। তাঁদের ফ্ল্যাটবাড়ির সামনে দিয়ে ছুটে যাচ্ছে লোক। পিছনে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করছে পুলিশ। ফ্ল্যাটে নীলাঞ্জনা একা। চারদিক থেকে তখন ভাঙচুর, আগুন লাগার খবর আসছে।

বাবা নির্মাল্য ভট্টাচার্য দিল্লিতে স্পাইসজেটের বিমানে বসে। গন্তব্য কলকাতা। জরুরি কাজ, যেতেই হবে। ফোন পেয়ে মেয়েকে শুধু বলেন, ‘‘উপরে কাকুদের ফ্ল্যাটে চলে যাও।’’ শুক্রবার বিকেলের ঘটনা। হরিয়ানার পঞ্চকুলার ২০ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা, পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্রী নীলাঞ্জনা সেই থেকে কাকুদের বাড়িতেই থাকছেন। ভাই থাকেন জয়পুরে। মা বেড়াতে গিয়েছেন লন্ডন।

রবিবার পঞ্চকুলায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে নীলাঞ্জনা জানালেন, গত শুক্রবার থেকেই সেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। মঙ্গলবারই অবশ্য পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ঠেকেছিল। ওই দিন নীলাঞ্জনা দেখেছিলেন, তাঁদের বাড়ির সামনের ফুটপাথে জড়ো হয়েছেন গ্রাম্য, দোহারা চেহারার কিছু মানুষ। ফুটপাথেই থাকতে শুরু করেছেন তাঁরা। বুধবার থেকে এলাকায় স্কুল-কলেজ-অফিস বন্ধ হয়ে যায়। সে দিন বাড়ি থেকে বেরিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারেননি তিনি। চারদিকে শুধু পুলিশের ব্যরিকেড। নীলাঞ্জনার কথায়, ‘‘কলকাতায় যে রকম শহরের মাঝে মাঝে একচালা বস্তি রয়েছে, এখানে সে রকম যুগ্গিওয়ালারা থাকেন। প্রথমে মনে হয়েছিল, বস্তি উচ্ছেদে নেমেছে প্রশাসন। যুগ্গিওয়ালাদের হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

পরে বোঝেন, ব্যাপারটা তা নয়। ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের মামলার শুনানির জন্য পঞ্চকুলায় জড়ো হচ্ছেন তাঁর ভক্তকুল। বুধবার থেকেই কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। বারান্দা থেকে নীলাঞ্জনা ও তাঁর বাবা দেখেন, ফুটপাথ দখল করা ভক্তকুলের জন্য ভ্রাম্যমান শৌচালয় ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের সামনেই। সেক্টর ২৩-এ ডেরার একটি বড়সড় আশ্রম রয়েছে। সেখান থেকে সকাল-বিকেল ভক্তদের জন্য খাবার আসতে শুরু করেছে। সে-ও পুলিশের সামনে।

তবে এই ভক্তেরা কেউ সশস্ত্র ছিলেন না বলে জানিয়েছেন নীলাঞ্জনা। তাঁর কথায়, ‘‘এই নিরাপত্তার বাড়াবাড়িতে বৃহস্পতিবার থেকে দুধ-পাউরুটি-ডিম আসা বন্ধ হয়ে যায়। শুনলাম পুলিশ নাকি দুধ-ডিমের গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছে না। রাস্তায় যাঁরা আনাজ বিক্রি করেন, তাঁরাও উধাও হয়ে যান। দোকানদারেরা আগে থেকে খবর পেয়ে গিয়েছিলেন। বুধ ও বৃহস্পতিবার দোকানে গেলে বলা হয়েছে, খাবার বেশি করে কিনে মজুত করে রাখতে।’’

এই অবস্থায় শুক্রবার সকালে কলকাতা রওনা হয়েছিলেন নির্মাল্যবাবু। আর দুপুরে রায় বেরোতে শুরু হয় হাঙ্গামা। নির্মাল্যবাবু বলেছেন, ‘‘এখানকার আদালতে একটি মামলার জরুরি শুনানি ছিল। সেটা শেষ করেই ফিরব।’’

Panchkula violence Panchkula violence trapped Bengali student ilanjana Bhattacharya নীলাঞ্জনা ভট্টাচার্য
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy