E-Paper

ঘুষ বিরোধী আমলেই: বিজেপি

এ দিন গৌতম আদানিকে গ্রেফতার এবং আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেন রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতেই পাল্টা আক্রমণে নামলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের ঠিক আগে ওই অভিযোগ কেন প্রকাশ্যে এল, তা নিয়ে সরব হওয়ার পাশাপাশি কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলিতে আদানিদের বিপুল বিনিয়োগ (রাহুল গান্ধীর ছুৎমার্গ সত্ত্বেও) নিয়ে আক্রমণ শানান বিজেপি নেতারা। তবে দল মনে করছে, মহারাষ্ট্র নির্বাচনের আগে বিষয়টি সামনে এলে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল।

আদানি কাণ্ড সামনে আসতেই আজ ধস নামে শেয়ার বাজারে। এ জন্য কংগ্রেসকেই দায়ী করার কৌশল নেয় বিজেপি। বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘বিদেশি মদতে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ শানিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির ভিতকে দুর্বল করে দেওয়াই কংগ্রেসের লক্ষ্য। তাদের অপপ্রচারের কারণে শেয়ার বাজারে ধস নামে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কয়েক কোটি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।

এ দিন গৌতম আদানিকে গ্রেফতার এবং আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেন রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস। বিজেপির দাবি, ২০২১-২২ সাল নাগাদ সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহের প্রশ্নে যে রাজ্যগুলির সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর চুক্তি হয়েছিল, সেগুলির অধিকাংশেই ক্ষমতায় ছিলেন বিরোধীরা। সম্বিতের কথায়, সে সময়ে ছত্তীসগঢ়ে ছিল কংগ্রেস সরকার। তামিলনাড়ুতে সরকারে ছিল কংগ্রেসের শরিক ডিএমকে। অন্ধ্রপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল ওয়াইআরএস কংগ্রেস এবং ওড়িশায় বিজেডি সরকার। যারা কোনও ভাবেই বিজেপির শরিক ছিল না। সম্বিতের কথায়, ‘‘দুর্নীতি যা হয়েছে, তা কংগ্রেসশাসিত বা কংগ্রেসের শরিক দলের রাজ্যে হয়েছে। ফলে কংগ্রেস ওই দুর্নীতির দায় এড়াতে পারে না। ওই সরকারের সময়ে কী ভাবে বরাত দেওয়া হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হোক।’’

যদিও কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময়ে জম্মু-কাশ্মীরে বকলমে কেন্দ্রের শাসন ছিল। অন্ধ্রপ্রদেশে ও ওড়িশার শাসনাধীন দুই দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং বিজেডিকে তলে তলে মোদী সরকারকে সংসদে সমর্থন জানাতে দেখা গিয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, ওই দুর্নীতির সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি জড়িত। সেই কারণে বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া ভাবে তদন্ত করাতে ভয় পাচ্ছে তারা এবং অভিযোগের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে।

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগের সপ্তাহে তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে সরকার পক্ষ। ঘরোয়া ভাবে দলের বক্তব্য, আদানি কাণ্ডের সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িত নেই। তাই বিষয়টি জনমানসে সে ভাবে হয়তো প্রভাব ফেলবে না। তবে শেয়ার বাজারে ধস নামার সঙ্গে আমজনতার সম্পর্ক রয়েছে। তাই বাজারের পতনের পিছনে কংগ্রেসের হাত রয়েছে, এমন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করাই এখন তাদের লক্ষ্য।

দলের কাছে স্বস্তির বিষয় হল, মহারাষ্ট্র নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে আদানি কাণ্ডের প্রকাশ। নইলে মহারাষ্ট্রে এই ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পূর্ণ সম্ভাবনা ছিল। আগামী সপ্তাহে বিরোধীদের বিক্ষোভে সংসদের প্রথম সপ্তাহের অধিবেশন ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কাও করছে শাসক শিবির। বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী মহারাষ্ট্র বা ঝাড়খণ্ডে ভাল ফল করার সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির। তাই যতটা উজ্জীবিত ভাবে শীতকালীন অধিবেশন শুরু করা সম্ভব হত, আদানি কাণ্ডের পরে তা করা যাবে না বলে মনে করছে তারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gautam Adani Adani Group bribery case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy