মোদী সরকারের এগারো বছরের সাফল্যকে তুলে ধরতে মাঠে নামছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী সোমবার সরকারের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরে সাংবাদিক বৈঠক করার কথা রয়েছে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার। পরের দিন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানী শহরগুলিতে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরবেন দলের নেতারা। পশ্চিমবঙ্গে ওই সাংবাদিক বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সূত্রের খবর, এগারো বছরের বর্ষপূর্তি উদযাপনের পরেই বিজেপি সভাপতি বেছে নেওয়ার কাজ সেরে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে দল।
বিজেপি সূত্রের মতে, সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার পক্ষপাতী দল। এই মুহূর্তে তিনটি নাম নিয়ে দলের মধ্যে চিন্তাভাবনা চলছে। দৌড়ে রয়েছেন কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ। বর্ষীয়ান ওই নেতার সঙ্গে দলের অন্যান্য নেতারসুসম্পর্ক রয়েছে।
গত এক বছরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কাজের সুবাদে নরেন্দ্র মোদীর আস্থাভাজন তিনি। ফলে দলের একাংশের মতে, তাঁর নামে সম্মতি দিতে অসুবিধা হবে না আরএসএস ও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বর। দৌড়ে রয়েছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরও। বিজেপি শিবিরে মোদীর অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পরিচিত খট্টর। দলের একাংশের মতে, খট্টর সঙ্ঘের লোক। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। ২০২৯ সালের লোকসভা ভোটের কথা ভেবে আরএসএস নেতৃত্ব চাইছেন, দলের নিচুতলায় সংগঠন শক্তিশালীকরুক বিজেপি।
দলের এক নেতার কথায়, ‘‘সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই মুহূর্তে যোগ্য লোক হলেন খট্টর। কিন্তু মোদী ঘনিষ্ঠতার কারণে শেষ পর্যন্ত সঙ্ঘ তাঁকে আদৌও সভাপতি পদে মেনে নেবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’’ সূত্রের মতে, আরএসএস নেতৃত্ব বিজেপি সভাপতি হিসেবে এমন কোনও ব্যক্তিকে দেখতে চাইছেন যাঁর স্বতন্ত্র মতপ্রকাশের ক্ষমতা থাকবে।
এই দু’জন ছাড়া তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে দৌড়ে রয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। ওড়িশার ওই নেতা দলে অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সূত্রের মতে, জেপি নড্ডার পরে ধর্মেন্দ্রকেই পরবর্তী সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইছেন দলের একটি বড় অংশ। মৃদুভাষী ধর্মেন্দ্র এক দিকে যেমন পূর্ব ভারতের প্রতিনিধি তেমনি দলে দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত।
ওড়িশাতে সদ্য ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। ধর্মেন্দ্রকে সভাপতি করা হলে রাজ্যের মানুষকে বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠতা যেমন একটি নেতিবাচক দিক, তেমনি প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি দু’জনেই ওবিসি সমাজ থেকে বেছে নেওয়া হলে ভারসাম্যের রাজনীতি কতটা বজায় রাখা সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্নরয়েছে দলে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)