Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Madhya Pradesh Assembly Election 2023

শিবরাজে আস্থা নেই, বার্তা বসুন্ধরাকেও

মধ্যপ্রদেশে দু’টি তালিকা মিলিয়ে এ যাবৎ ৭৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। যাঁদের মধ্যে এখনও স্থান পাননি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান।

Vasundhara Raje Scindia

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৭
Share: Save:

বিজেপি তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদককে বিধানসভার টিকিট দেওয়ায় এই মুহূর্তে অন্তত তিন জন মধ্যপ্রদেশের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে রয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর শিবরাজ সিংহ চৌহান শেষ পর্যন্ত টিকিট পেলে সংখ্যাটা হবে চার। সূত্রের মতে, সেই কারণে ওই রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই মুখ করে নির্বাচনে নামার কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের একাংশের মতে, মধ্যপ্রদেশের মাধ্যমে ভোটমুখী রাজস্থানের বিজেপি নেতৃত্ব, মূলত বসুন্ধরা রাজে শিবিরকে পরোক্ষে বার্তা দেওয়ার কাজ সেরে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী।

মধ্যপ্রদেশে দু’টি তালিকা মিলিয়ে এ যাবৎ ৭৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। যাঁদের মধ্যে এখনও স্থান পাননি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। পরিবর্তে গত কাল তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, প্রহ্লাদ সিংহ পটেল, ফগ্গন সিংহ কুলস্থ ও সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় টিকিট পেয়েছেন। আজ সংবাদমাধ্যমে কৈলাস বলেন, ‘‘শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু দলের নির্দেশে লড়তে প্রস্তুত।’’ অবাক হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তোমরও। তাঁর কথায়, ‘‘দল আগে পুরভোটেও আমাকে নামিয়েছে। যদি দল বলে তা হলে লড়তে রাজি।’’ তিনি যে টিকিট পাচ্ছেন তা ঘুণাক্ষরেও জানতেন না সাংসদ গণেশ সিংহও।

দ্বিতীয় তালিকায় মোট সাত জন লোকসভার সাংসদকে বিধানসভার টিকিট দিয়েছে দল। যাঁদের মধ্যে তিন জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দলের লক্ষ্য হল, সাংসদেরা নিজেদের আসন জেতার পাশাপাশি সংলগ্ন কেন্দ্রগুলিতেও দলকে জেতাতে সাহায্য করবেন।

তবে কৈলাস-সহ তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে টিকিট দেওয়া থেকে স্পষ্ট, ওই রাজ্যে ভোটে জিততে শিবরাজের উপরে ভরসা করতে পারছে না দল। সংশয় তৈরি হয়েছে শিবরাজের টিকিট পাওয়া নিয়েও। কংগ্রেস শিবিরের দাবি, একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই রাজ্যে শিবরাজকে কোণঠাসা করার নীতি নিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে বসে রয়েছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে শিবরাজের নাম বা তাঁর কোনও প্রকল্পের নাম নেননি। এর থেকেই স্পষ্ট দলে শিবরাজের প্রতি আস্থা নেই। সেখানে মধ্যপ্রদেশের মানুষ কী ভাবে তাঁর উপরে ভরসা করবেন?’’ তবে কংগ্রেস মনে করছে, দলীয় কোন্দল এড়াতে শিবরাজকে টিকিট দেওয়া হলেও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে না। কারণ, শিবরাজ টিকিট না পেলে ভোটের আগে বসে যাবেন। অন্তর্ঘাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে তাঁকে টিকিট দিলেও প্রধানমন্ত্রীকেই ওই রাজ্যের মুখ হিসেবে তুলে ধরে ভোট চাইবে বিজেপি।

কর্নাটক ও হিমাচল প্রদেশে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে ভোট চেয়ে হেরে গিয়েছিল দল। কংগ্রেসের মতে, রাজ্য বিধানসভায় মোদী ম্যাজিক যে চলছে না তা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ফের স্পষ্ট হয়ে যাবে। কংগ্রেসের দাবি, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি খুব বেশি হলে ৭০-৭৫টি আসন পেতে চলেছে। সেখানে কংগ্রেস ১৩০-এর কাছাকাছি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে।

মধ্যপ্রদেশে শিবরাজকে ‘এক ঘরে’ করার মাধ্যমে রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজেকেও বার্তা দেওয়া হল বলেই মনে করছেন বিজেপির অনেকে। ভোটমুখী রাজস্থানে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করতে হবে বলে গোঁ ধরে বসে রয়েছেন বসুন্ধরা। অন্য বিজেপি নেতারা ওই রাজ্যে প্রচার শুরু করে দিলেও প্রাক্তন ওই মুখ্যমন্ত্রীকে এখনও পথে নামতে দেখা যায়নি। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না করা হলে তিনি বসে যাবেন বলে ঘরোয়া ভাবে হুমকি দিয়ে রেখেছেন বসুন্ধরা। যা ভাল ভাবে নেননি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই বুঝিয়ে দেওয়া হল, প্রয়োজনে বসুন্ধরাকেও এক ঘরে করতে পিছপা হবে না দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE