Advertisement
E-Paper

উনিশের ‘অজেয়’ স্বপ্নে বিজেপির আতঙ্ক কিন্তু রাহুলই

পেট্রল-ডিজেলের দাম থেকে রাফাল-কেলেঙ্কারি, বেকারি, কৃষক আত্মহত্যা— ব্যর্থতার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিবাদে এককাট্টা হচ্ছে বিরোধীরা। নেতৃত্বে রাহুল গাঁধী। এই অবস্থায় হারের আতঙ্ক কি চেপে বসেছে বিজেপির উপরে?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৯
আলোচনা: বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সভাপতি অমিত শাহ। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

আলোচনা: বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সভাপতি অমিত শাহ। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

পেট্রল-ডিজেলের দাম থেকে রাফাল-কেলেঙ্কারি, বেকারি, কৃষক আত্মহত্যা— ব্যর্থতার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিবাদে এককাট্টা হচ্ছে বিরোধীরা। নেতৃত্বে রাহুল গাঁধী। এই অবস্থায় হারের আতঙ্ক কি চেপে বসেছে বিজেপির উপরে?

দিল্লিতে দু’দিনের কর্মসমিতির বৈঠকের শেষে এমন ভাবনাই উঁকি মারছে বিজেপির অনেকের মনে। ঘরোয়া আলোচনায় তাঁদের প্রশ্ন, তা না হলে কেন অমিত শাহকে বলতে হল, ‘‘মোদী কোনও দিন হারেননি?’’ কেনই বা মোদীর বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়ে রইল রাহুল গাঁধী ও তাঁর উদ্যোগে বিরোধী জোট? অবশ্যই রাহুলের নাম করেননি মোদী।

কর্মসমিতির এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল লোকসভার আগে দলকে চাঙ্গা করা। সে জন্য অমিত শাহের মন্ত্র, ‘‘২০১৯-র লোকসভা জিতলে আগামী ৫০ বছরে হারানোর কেউ নেই।’’ মোদীও বলেছেন, তাঁর সামনে কোনও চ্যালেঞ্জই নেই। গত কাল অমিত শাহ স্লোগান তুলেছিলেন, ‘অজেয় বিজেপি’। সেই স্লোগানে ঔদ্ধত্যের গন্ধ আছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করায় মোদী আজ বললেন, ‘‘অজেয় ভারত, অটল বিজেপি।’’ যে স্লোগানে অটলবিহারী বাজপেয়ীকে সামনে রেখে সুকৌশলে উচ্চবর্ণের ক্ষোভে জল ঢালতে চাইলেন। বোঝালেন, পরবর্তী ভোটে এটাই বিজেপির স্লোগান। কিন্তু এ নিয়েও তো গোল বেধেছে! অনেকে বলছেন, মোদী জমানায় তো অটল-আডবাণীকে দল পাত্তাই দেয়নি। এখন বিপাকে পড়ে অটলকে ধরে বাঁচতে চাইছেন মোদী।

তা ছাড়া, সামনে কোনও চ্যালেঞ্জ নেই বলে দাবি করলেও আজ কর্মসমিতির শেষে নিজের বক্তৃতার সিংহভাগ মোদী ব্যয় করলেন কংগ্রেস ও বিরোধী জোটকে তোপ দেগে। নাম না করলেও তাঁর বক্তৃতা ছিল রাহুলময়। আসলে ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাফাল থেকে পেট্রোপণ্য, বেকারি থেকে মূল্যবৃদ্ধি— সব বিষয়ে বিরোধীদের আক্রমণে নাজেহাল বিজেপি। মোদী সরকারের ব্যর্থতাকে নিশানা করেই আগামিকাল দেশজুড়ে ভারত-বন্‌ধের ডাক দিয়েছে বিরোধীরা। উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহও মেনে নিয়েছেন, ‘‘বিরোধীরা জোট বাঁধলে অঙ্কের নিরিখে এগিয়ে। কিন্তু বিজেপির সংগঠন ও প্রকল্পের জোরে তাকে হারানো যাবে।’’

আরও পড়ুন: ফুলন দেবীর পর ‘জিজি’, চম্বলের নয়া দস্যুরানির খোঁজে ঘুম ছুটেছে পুলিশের

এমন চাপের মুখেই মোদী আজ নাম না করে রাহুলকে বিঁধে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নেতৃত্ব স্বীকার করতে কেউ রাজি নয়। অনেক দল তাকে বোঝা মনে করে। আর কংগ্রেসের ভিতরেও অনেকে তাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে স্বীকার করেন না। তার উপর পরস্পরকে অপছন্দ করলেও বিরোধীরা একসঙ্গে আসতে বাধ্য হয়েছে। এটাই আমাদের সাফল্য। কংগ্রেস হোক বা তথাকথিত বিরোধী জোট, তাদের নেতৃত্বের ঠিকানা নেই, নীতিও অস্পষ্ট।’’

আসলে আতঙ্কটা বিরোধী জোট। তাই রাফাল-পেট্রোপণ্য-মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোনও শব্দ খরচ না করলেও ভোটে বিরোধীদের ঠেকানোর দাওয়াই দিলেন প্রধানমন্ত্রী! বললেন, ‘‘ওরা রোজ মিথ্যা কথা বলছে আর সেটা বারবার বলছে। এর জবাব দিতে হবে। মিথ্যা ঘোচাতে এনডিএ-র ৪৮ মাসের কাজ আর এক পরিবারের ৪৮ বছরের খতিয়ান তুলে ধরতে হবে।’’

মোদী-শাহের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী রাহুল-আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন! রাহুল ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছেন না! তাতেও ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করছেন।’’ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, ‘‘এটাই মোদী-শাহের ‘শাহি ঔদ্ধত্য’!’’

election Lok Sabha Election 2019 Rahul Gandhi BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy