Advertisement
E-Paper

৬০ জনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মসমর্পণ কিষেণজির ভাইয়ের! মাওবাদীদের পলিটব্যুরোয় ছিলেন বেণুগোপাল

সোমবার গভীর রাতে গড়ছিরৌলিতে ৬০ জন মাওবাদী সদস্যকে নিয়ে অস্ত্রসমর্পণ করেছেন বেণুগোপাল ওরফে সোনু। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরেই অস্ত্রসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন বেণুগোপাল। লিখেছিলেন, ‘‘দলকে বাঁচাতে সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করার সময় এসেছে’’।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৩৫
(বাঁ দিকে) নিহত মাওবাদী নেতা কিষেণজি। বেণুগোপাল রাও (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) নিহত মাওবাদী নেতা কিষেণজি। বেণুগোপাল রাও (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

৬০ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে মহারাষ্ট্রের গড়ছিরৌলিতে আত্মসমর্পণ করলেন নিহত মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির ভাই মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) হারাল দলের পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের এই মুহূর্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে।

সোমবার গভীর রাতে গড়ছিরৌলিতে ৬০ জন মাওবাদী সদস্যকে নিয়ে অস্ত্রসমর্পণ করেছেন বেণুগোপাল ওরফে সোনু। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরেই অস্ত্রসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন বেণুগোপাল। লিখেছিলেন, ‘‘দলকে বাঁচাতে সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করার সময় এসেছে’’। তারও আগে গত এপ্রিল মাসে সোনুর নাম করে একটি ‘শান্তিবার্তা’ এসেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। তাতে জানানো হয়েছিল, হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত মাওবাদী পলিটব্যুরো বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রকে শান্তি আলোচনা এবং সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। সেই থেকেই বিভিন্ন মহলে জল্পনা চলছিল, শীঘ্রই আত্মসমর্পণ করতে পারেন তিনি। অবশেষে তা-ই হল!

২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর। পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামের বুড়িশোলের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল কিষেণজির। বেণুগোপাল সেই কিষেণজিরই ভাই। ভূপতি ওরফে রাজন ওরফে বিবেক ওরফে অভয় ওরফে সোনু— এমনই নানা নামে পরিচিত ছিলেন ৭০ বছরের এই নেতা। দলের আদর্শিক প্রধান হওয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ সংক্রান্ত বিষয়গুলিও দেখতেন তিনিই। ১৯৮০-এর দশকে পিপল্‌স ওয়ার গ্রুপে যোগ দেন বেণুগোপাল। ২০১০ সালে সিপিআই (মাওবাদী)-র মুখপাত্র হিসাবে নিযুক্ত হন। লালগড় অভিযান চলাকালীন কিষেণজির মৃত্যুর পর অভিযানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনিই। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ায় মাওবাদী উপদ্রুত রাজ্যগুলিতে নিরাপত্তাবাহিনীর নতুন করে অভিযান শুরুর পর আত্মসমর্পণ করেন বেণুগোপালের স্ত্রী বিমলা চন্দ সিদাম ওরফে তারাক্কা। পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র কমান্ডার এবং দণ্ডকারণ্য জ়োনাল কমিটির নেত্রী বিমলাও ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঘটনাচক্রে, তার ১০ মাসের মধ্যে বেণুগোপালও আত্মসমর্পণ করলেন।

সেপ্টেম্বর মাসে বেণুগোপালের অস্ত্রসমর্পণের সাম্প্রতিকতম বার্তাটি প্রকাশ্যে এসেছিল। তা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছিল বিস্তর। কেউ কেউ তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ও বলতে শুরু করেছিলেন। তবে বেণুগোপালের সেই চিঠি বিশাল সমর্থনও পেয়েছিল দেশের নানা প্রান্তে। ছত্তীসগঢ় এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকার মাওবাদী ক্যাডারদের একটি বড় অংশ তাঁকে সমর্থন করেছিল। এ হেন আদর্শনৈতিক সংঘাত, জনগণের কাছে ক্রমশ প্রাসঙ্গিকতা হারাতে থাকা, এবং অন্য দিকে বেণুগোপালের চলে যাওয়াকে সিপিআই (মাওবাদী)-র জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

আগামী বছর ৩১ মার্চের মধ্যে দেশকে ‘মাওবাদী মুক্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে মাসকয়েক আগেই ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে মাওবাদীদের নির্মূল করতে একের পর এক অভিযান শুরু করে সরকার। যৌথ বাহিনীর টানা অভিযানে সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক বাসবরাজ এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিবেক-সহ বেশ কয়েক জন নিহত হয়েছেন। আত্মসমর্পণ করেছেন একের পর এক মাওবাদী। তবে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে এখনও বেশ কিছু মাওবাদী রয়েছেন। সোমবারই মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছেন বিজেপি কর্মী সত্যম পুনম। ঘটনাস্থল থেকে একটি হাতে লেখা পোস্টারও পাওয়া গিয়েছে। মাওবাদী মাডেড এরিয়া কমিটির নাম করে চিঠিতে লেখা হয়েছে, পুলিশের চরবৃত্তি করার ‘শাস্তি’ হিসাবেই খুন করা হয়েছে পুনমকে।

Maoist Maoist Leader surrender Kishenji
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy