Advertisement
E-Paper

অবৈধ আবাসিকদের ফেরাতে শর্ত দিল্লির

ব্রিটেনে বসবাসের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও অনেক ভারতীয় অবৈধ ভাবে সেখানে বাস করছেন। এমন অভিযোগ এনেছিলেন টেরেসা মে। জানিয়েছিলেন, এদের দ্রুত দেশে ফেরানো হবে। কিন্তু ব্রিটেনের সেই অভিযোগ নিয়ে এখন পাল্টা চাপ দিচ্ছে নয়াদিল্লি।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:০৯

ব্রিটেনে বসবাসের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও অনেক ভারতীয় অবৈধ ভাবে সেখানে বাস করছেন। এমন অভিযোগ এনেছিলেন টেরেসা মে। জানিয়েছিলেন, এদের দ্রুত দেশে ফেরানো হবে। কিন্তু ব্রিটেনের সেই অভিযোগ নিয়ে এখন পাল্টা চাপ দিচ্ছে নয়াদিল্লি।

দিল্লি এসে টেরেসা কার্যত এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে ভারত বেআইনি ভাবে ব্রিটেনে থেকে যাওয়া নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে অক্ষম। আর সে কারণেই ভারতীয় পড়ুয়াদের ভিসা দেওয়ার প্রশ্নে এই বজ্র আঁটুনি ব্রিটেনের। দু’টো বিষয়কে ব্রিটেন মিলিয়ে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন ভারত। সে কারণেই অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের প্রশ্ন নিয়ে কোনও জটিলতা সৃষ্টি করতে চাইছে না দিল্লি। কিন্তু ওই নাগরিকদের মধ্যে কারা ভারতীয়, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে। বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, বর্তমানে যে ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপ হচ্ছে, তাতে কোনও ব্যক্তির পরিচয় খতিয়ে দেখা জরুরি।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘‘ব্রিটেন চাইছে, তাদের তদন্ত অনুসারে যারা বেআইনি বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক, তাদের ফেরত পাঠাতে। কিন্তু যত ক্ষণ না বিষয়টি অনুসন্ধান করে আমরা নিশ্চিত হব, তত ক্ষণ কাউকে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’’ বিদেশ মন্ত্রকে ইউরোপ বিভাগের যুগ্মসচিব রনধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘ব্রিটেন ওই সব নাগরিকদের সম্পর্কে নথি দিলে আমরা তা নিজস্ব প্রক্রিয়ায় তা খতিয়ে দেখব। তার পরেই ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হতে পারে।’’ সাউথ ব্লকের কর্তাদের মতে, কোনও ব্যক্তি বেআইনি ভাবে বিদেশি রাষ্ট্রে থেকে যাচ্ছেন কিনা, তা শুধুমাত্র সেই দেশের দাবির উপরেই নির্ভর করে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের দেশকেও এ ব্যাপারে একমত হতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি সহযোগিতা করারও দায়িত্ব রয়েছে ওই বিদেশি রাষ্ট্রটির।

তবে ভারতীয় নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে কট্টর অবস্থান নিতে চাইছে না দিল্লি। বরং এ ব্যাপারে একটি পাইলট প্রজেক্টকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছে মোদী সরকার। মন্ত্রিসভায় এটি পাশ করানো হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসের ১২ তারিখ। প্রাথমিক ভাবে এটি সুইৎজারল্যান্ডে বেআইনি ভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। তবে এর লক্ষ্য শুধু সুইৎজারল্যান্ড নয়। তখনই স্থির হয়, মডেল হিসেবে যদি এটি ভাল কাজ করে, তা হলে একেই ইউরোপের অন্য দেশগুলির ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হবে।

ব্রিটেনের লগ্নি টানার প্রশ্নে বেআইনি বসবাসকারীদের বিষয়টি যে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা স্বীকার করছেন ভারতীয় কর্তারা। ব্রেক্সিট পরবর্তী অধ্যায়ে যেমন ব্রিটেনের লক্ষ্য ভারতের বিরাট বাজার ধরা, তেমনই দিল্লিও চাইছে সে দেশের লগ্নি। আজ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ভারত-ব্রিটেন প্রযুক্তি সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘‘সাত দশক ধরে ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্কের ভিত্তিই হল বাণিজ্য ও শিক্ষা। ব্রেক্সিটের পরে আমরা ব্রিটেনের আরও লগ্নি চাইছি। বাণিজ্য বাড়ুক। এ জন্য ভারতের অর্থনীতিকে খুলে দিয়েছি আমরা। ভবিষ্যতে আরও আর্থিক সংস্কার হবে।’’ ব্রিটেনের স্টেট সেক্রেটারি (আন্তর্জাতিক বাণিজ্য) লিয়াম ফক্স-এর কথায়, ‘‘ব্রেক্সিটের পরে ব্রিটেনের সামনেও অন্যান্য দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য সম্পর্ক তৈরির সুযোগ এসেছে। সে দিকে তাকিয়েই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমরা ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করেছি।’’

Theresa May Illegal residents
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy