Advertisement
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
National News

আখলাক-কাণ্ডের তদন্ত করার জন্যই দাদাকে খুন করা হয়েছে, অভিযোগ নিহত সুবোধের বোনের

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সুবোধের আত্মীয়স্বজনেরা।

বুলন্দশহরে রীতিমতো সাজানো দাঙ্গা করেই খুন করা হয়েছে ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহকে। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

বুলন্দশহরে রীতিমতো সাজানো দাঙ্গা করেই খুন করা হয়েছে ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহকে। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১৯
Share: Save:

দাদরি-কাণ্ডের তদন্ত করেছিলেন বলেই ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা করেছে। এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন সুবোধের বোন। তাঁর আরও দাবি, রীতিমতো সাজানো দাঙ্গা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এবং পুলিশই এই যড়যন্ত্রে সামিল রয়েছে।

সুবোধের বোনের কথায়, “আমার দাদা মহম্মদ আখলাকের কেস (দাদরি-কাণ্ড) তদন্ত করেছিল। সে জন্যই তাঁকে খুন করা হল। এটা পুলিশের যড়যন্ত্র।”

উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে সোমবার গো-হত্যার গুজবের প্রেক্ষিতে উন্মত্ত বিক্ষোভকারীদের সামলাতে ঘটনাস্থলে পুলিশকর্মীদের নিয়ে গিয়েছিলেন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। প্রথমে পাথর ছুড়ে, পরে তাঁর পিছুধাওয়া করে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। পুলিশ ভ্যান থেকে নামিয়ে তাঁরই সার্ভিস রিভলভার দিয়ে সুবোধকে গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা।

(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)

এই ঘটনায় কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের হাত রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। এ দিন ধৃতদের মধ্যে রয়েছে বিজেপি, বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং শিবসেনার নেতা-কর্মীরা। ঘটনার পর যোগী আদিত্যনাথ সরকার সুবোধের পরিবারকে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। তবে তা নিতে নারাজ সুবোধের পরিবার। সুবোধের বোন বলেন, “আমরা টাকা চাই না। আমার দাদাকে শহিদের সম্মান দেওয়া হোক। তাঁর স্মৃতিতে সৌধ গড়া হোক।”

আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে পুলিশ খুনের পিছনে বজরং-ভিএইচপি যোগ! গ্রেফতার পাঁচ, শহরে ১৪৪ ধারা

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সুবোধের আত্মীয়স্বজনেরা। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও অসন্তোষ নিজেদের হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারেননি তাঁরা। আইন-শঙ্খৃলার উন্নতি না করে যোগী আদিত্যনাথ কেবল ‘গো-মাতা’, ‘গো-মাতা’ করেন বলেও অভিযোগ তাঁদের।

আরও পড়ুন: ‘মার মার করে ওরা ছুটে আসছিল, প্রাণ বাঁচাতে স্যরকে ছেড়েই পালাই’

প্রায় তিরিশ বছরের কর্মজীবনে উত্তরপ্রদেশের মেরঠ, মুজফ্‌ফরনগর এবং সহারানপুরে বিভিন্ন পদে ছিলেন সুবোধ। মাস দুয়েক আগেই বুলন্দশহরে বদলি হয়ে এসেছিলেন ৪৭ বছর বয়সি এই পুলিশ ইনস্পেক্টর। ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও সুবোধের মৃত্যুকে মেনে নিয়ে পারছেন না তাঁর স্ত্রী। কান্নাভেজা গলায় তাঁর হাহাকার, “এক বার আমার স্বামীকে ছুঁয়ে দেখতে দাও। তা হলেই ও ভাল হয়ে উঠবে।”

আরও পড়ুন: ফেক নিউজের বিরুদ্ধে প্রচার করতে টিভিতে বিজ্ঞাপন নিয়ে আসছে হোয়াটসঅ্যাপ

সুবোধের মৃত্যুর খবরটা শোনামাত্রই এক লহমায় যেন দুনিয়াটাই বদলে গিয়েছিল তাঁর বড় ছেলের। বাবা আর নেই— এ কথা এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অভিষেক কুমারের। অভিষেক বলেন, “ধর্মের নামে যাঁরা হিংসা ছড়ায়, আমি যেন তাঁদের মতো না হই। আমি যেন সুনাগরিক হই, চেয়েছিলেন বাবা।” অভিষেক জানিয়েছেন, বুলন্দশহরের ঘটনার এক দিন আগেই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন সুবোধ। বাবার কথাগুলো এখনও মনে ভেসে আসে তাঁর। কোনও রকমে কান্না লুকিয়ে তিনি বলেন, “বাবা সব সময় বলতেন, হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, এখানে সকলেই সমান।”অভিষেকের প্রশ্ন, “এ বার তো আমার বাবা মারা গেলেন, কিন্তু, এর পর কার পালা… ?”

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)

অন্য বিষয়গুলি:

Bulandshahr Cow Slaughter Mob Violence Uttar Pradesh Gau Rakshak VHP Bajrang Dal BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy