Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National news

১১ জানলা, ১১ রড, ১১ পাইপ, রহস্য কাটছে না ‘আত্মঘাতী’ ১১ জনকে নিয়ে!

মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে বাড়ির অন্যান্য বিষয়ে ১১-র এই অদ্ভুত মিলটাই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

ভাটিয়া-বাড়ির এই ১১টি পাইপ নিয়েই প্রশ্ন। —নিজস্ব চিত্র।

ভাটিয়া-বাড়ির এই ১১টি পাইপ নিয়েই প্রশ্ন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব স‌ংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ১৪:০০
Share: Save:

১১-র গোলকধাঁধায় জড়িয়ে যাচ্ছে ভাটিয়া পরিবারের মৃত্যু রহস্য। একই পরিবারের ১১ জনের মৃত্যু ঘিরে রহস্য কিছু কম ছিল না। তাতে নতুন মোড় এসেছে বাড়ি ঘিরে এই ১১-র রহস্য! ভাটিয়া পরিবারের বুরারির ওই বাড়িতে মোট ১১টা পাইপ এবং ১১টা জানলা রয়েছে। ১১টা রড দিয়ে তৈরি হয়েছে বাড়ির সদর দরজা। মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে বাড়ির অন্যান্য বিষয়ে ১১-র এই অদ্ভুত মিলটাই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

তবে কি গুপ্তসাধনার জন্য অনেক আগে থেকে প্রস্তুত ছিল ভাটিয়া পরিবার? পূর্বপরিকল্পনা মতো তা-ই ১১-র সঙ্গে মিল করে জানলা, দরজা বানিয়েছিলেন তাঁরা?

মৃত্যু-রহস্যের তদন্ত করার সময় বাড়ির পিছনের দেওয়ালে ১১টি পাইপ দেখতে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। যার মধ্যে ৪টি পাইপ সোজা এবং বাকি ৭টি পাইপ বাঁকানো। এখানেও মিল পাওয়া গিয়েছে মৃতদের সঙ্গে। কারণ খুব অদ্ভুত ভাবে যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং বাকি ৭ জন মহিলা ছিলেন। তার উপর পুরো বাড়িতে জানলার সংখ্যাও ১১। এমনকি বাড়িতে ঢোকার প্রধান দরজাও ১১টি লোহার রড দিয়ে তৈরি করিয়েছিল ভাটিয়া পরিবার।

সিলিংয়ের এই লোহার রড থেকেই ঝুলছিল ১১ জনের মৃতদেহ

পুলিশ জানিয়েছে, বাঁকানো পাইপগুলো জল বেরনোর জন্য এবং বাকি ৪টে সোজা পাইপ হাওয়া চলাচলের জন্য লাগানো ছিল দেওয়ালে। কারণ ভাটিয়া পরিবারের ওই বাড়িতে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা সে ভাবে নেই। যেগুলো প্রত্যেকটা ঘরের এগ্‌জস্ট ফ্যানের সঙ্গে যুক্ত করা ছিল। মৃতের সংখ্যার সঙ্গে ১১-র এই মিলে সত্যিই কোনও রহস্য রয়েছে নাকি পুরোটাই কাকতালীয়, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ‘মোক্ষের’ খোঁজেই কি ফাঁস গলায়!

এ ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় ভাবাচ্ছে পুলিশকে। তার অন্যতম হল ঘটনার দিন রাতে বাড়ির মূল দরজা খোলা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, মোক্ষ লাভের জন্য গণআত্মহত্যার মতো কাজ সাধারণত সবাই গোপনে করে থাকেন। দরজা খুলে রেখে কেউ করেন না। ওই বাড়ি থেকে যে রহস্যময় ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে তাতে কুসংস্কারের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। খোলা দরজা এবং ওই ডায়েরি দুই মিলিয়ে পুলিশের অনুমান, ঘটনার দিন ওই বাড়িতে অন্য কেউ থাকতে পারে। যে পুরো ঘটনার পর দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। তার জন্যই দরজা খোলা অবস্থায় ছিল। বাড়ির একেবারে সামনেই রাস্তা হওয়ায় লোকের নজর এড়িয়ে বেরিয়ে যাওয়াটা খুব একটা মুশকিলও হবে না ওই ব্যক্তির পক্ষে।

আরও পড়ুন: খুনই হয়েছেন ভাটিয়ারা, দাবি আত্মীয়দের

পুলিশ বাড়িটির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে। কিন্তু ভাটিয়া বাড়ির আশেপাশের বাড়িতে যে কটা সিসিটিভি রয়েছে, তার প্রায় সব ক’টাই খারাপ হওয়ায় ওই রাতে কোনও ব্যক্তি বাড়ি থেকে বেরিয়েছে কি না তা জানতে পারেনি পুলিশ। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, রাত পৌনে ১২টা নাগাদ বাড়িঘেঁষা দোকান বন্ধ করেন পরিবারের বড় ছেলে ভবনেশ। তার ঘণ্টাখানেক আগে এক ‘ফুড ডেলিভারি বয়’ খাবার নিয়ে তাঁদের বাড়িতে এসেছিলেন। তার পর আর কাউকে আসতে দেখেননি প্রতিবেশীরা। তবে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির সূত্র ধরে পুলিশ জানেগাদি বাবা নামে এক ব্যক্তির সন্ধান করছে। ওই বাবার সন্ধান পাওয়া গেলে মৃত্যু রহস্যের জট খোলা যাবে বলে পুলিশ মনে করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burari death Suicide Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE