Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Mission Karmayogi

মিশন কর্মযোগী, মোদী আমলাতন্ত্র সংস্কারের পথে

গতানুগতিকতা ভেঙে এ বার আমলাতন্ত্রের সংস্কারে ‘মিশন কর্মযোগী’ প্রকল্প শুরু করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সাংবাদিক বৈঠকে জিতেন্দ্র সিংহ ও প্রকাশ জাভড়েকর।—ছবি পিটিআই।

সাংবাদিক বৈঠকে জিতেন্দ্র সিংহ ও প্রকাশ জাভড়েকর।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১০
Share: Save:

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদী চাইতেন, তাঁর রাজ্যের আমলারা কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদের মতো কাজ করুন। তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানেন, প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের আমলা ও কর্মীদের গতানুগতিক কাজ করে যাওয়া নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম হতাশার কারণ।

সেই গতানুগতিকতা ভেঙে এ বার আমলাতন্ত্রের সংস্কারে ‘মিশন কর্মযোগী’ প্রকল্প শুরু করছে কেন্দ্রীয় সরকার। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে মোদী সরকার একে দেশের আমলাতন্ত্রের বৃহত্তম সংস্কার বলে দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নিজের দাবি, ‘‘মিশন কর্মযোগী সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করবে।’’

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ক্ষোভ ছিল, আমলাতন্ত্রের গতানুগতিক মানসিকতার জন্যই বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ঠিকমতো রূপায়ণ হয় না। কর্মী-আধিকারিকেরা নিয়ম মেনে কাজ করে যান। নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করেন না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বা কোনও বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠার জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় না।

আরও পড়ুন: টুইটারর ২৮০ অক্ষরে নরেন্দ্র মোদীকে হারানো যাবে না

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা কর্মিবর্গ দফতরের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের ব্যাখ্যা, এত দিন সরকারি কর্মী-আধিকারিকেরা আইনকানুন মেনে কাজ করে যেতেন। এখন তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করবেন। তার জন্য তাঁদের কী কী প্রশিক্ষণ দরকার, তার রূপরেখা তৈরি হবে। এর তদারকির জন্য খোদ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি পরিষদ তৈরি হবে। তাতে কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞেরা থাকবেন। সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি হবে কমিশন। শুধু আইএএস নয়, একেবারে নিচু তলার কর্মী থেকে সচিব পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য এই প্রকল্পে পাঁচ বছরে প্রায় ৫১১ কোটি টাকা খরচ হবে।

শুধু প্রশিক্ষণ নয়। কর্পোরেট সংস্থার মতোই সরকারি কর্মীদের সারা বছর ধরে কাজের মূল্যায়ন হতে থাকবে। কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব সি চন্দ্রমৌলির ব্যাখ্যা, এখন তো বছরের শেষে কাজের পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি হয়। এখন কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন রকম কোর্সের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। তার জন্য একটি পৃথক সংস্থাও তৈরি হবে। কর্মীদের মাথা পিছু বছরে ৪৩১ টাকা করে দিতে হবে। তবে প্রশিক্ষণ সফল ভাবে শেষ করতে পারলে সেই খরচ তাঁর দফতর দিয়ে দেবে। শুধু সরকারের তৈরি রূপরেখা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ নয়। সরকারি কর্মীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ীও তাতে যে কোনও কোর্স করতে পারবেন। এ জন্য হার্ভার্ড, বার্কলে-র মতো আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও সরকারের কথাবার্তা চলছে।

জিতেন্দ্র জানান, বছর তিনেক আগে প্রধানমন্ত্রী মুসৌরির লালবাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এ গিয়ে শিক্ষানবিস আইএএস-দের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখনই তিনি প্রশিক্ষণে ঘাটতি ও সমন্বয়ের অভাব বুঝতে পারেন। তখন থেকেই ‘মিশন কর্মযোগী’-র সলতে পাকানো শুরু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mission Karmayogi Narendra Modi Cabinet Ministry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE