লরিটি নিয়ে যদি বাটুল মিয়া কোনও ভাবে মিজোরামে প্রবেশ করতে পারত তাহলে হয়ত লরিচালক ও তার সঙ্গীর মৃতদেহ উদ্ধার হত। বাটুল মিয়াকে আটক করে এমনটাই মনে করছে করিমগঞ্জ পুলিশ।
এমএল-০১ ৮৬৯৫ নম্বরের লরিচালক কান্তা সিংহ মনিপুরের সম্ভই এলাকার বাসিন্দা। আর তাঁর সহকারি প্রেম সিংহ ইম্ফলের পাঙ্গাই এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা সাধারণত গুয়াহাটি দিয়েই মনিপুরে যাতায়াত করলেও বৃহস্পতিবার ফেরার সময় পথ পরিবর্তন করে শিলচরের জিরিবাম দিয়ে গুয়াহাটিতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শিলচরের ভাগাবাজারে এসে গুয়াহাটি যাওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে পথভ্রান্ত হয় লরির চালক সেখানে দু-একজন লোককে জানান। এমন সময় শিলচরের ভাগা বাজার এলাকার বাটুল মিয়া এসে জানায় সে তাঁদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। এরপর বাটুল মিয়া লরিতে উঠে বসে। লরির চালক কান্তা সিংহ পথ প্রদর্শককে রাস্তায় ভাত খাওয়ায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বাটুলের আচরণে সন্দেহ হয় লরিচালকের। শুধু তাই নয় রাতের অন্ধকারে লরিটি সে মিজোরামে নিয়ে যেতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ লরিচালকের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাটুলের হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে।
শিলচর থেকে গাড়ি নিয়ে গুয়াহাটি যাওয়ার সময় বদরপুরঘাট দিয়ে কালাইন যাওয়ার পথে চালক ফের পথভ্রান্ত হয়ে করিমগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরের ভেতরে দিনের বেলায় বড় গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই ট্রাফিক বিভাগের কর্মরত পুলিশ আব্দুল হালিম লরিটিকে ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য দাঁড় করান। সে সময় লরিচালক কান্তা সিংহ বৃহস্পতিবার রাতের সমস্ত কাহিনী পুলিশকে বলে।
লরিতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাটুল মিয়াকেও দেখতে পায় পুলিশ। তারপরই লরিচালক-সহ অন্যদের করিমগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। কান্তা সিংহ জানায়, মনিপুর থেকে অন্য পথে গুয়াহাটি যেতে গিয়েই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে ভাগা বাজারে পথ ভ্রান্ত হওয়ার পর সাহায্যের নামে বাটুল মিয়া তাদের গাড়ি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। তার গতিবিধি রহস্যজনক ঠেকায় তাকে বেঁধে রাখে গাড়িতে। চালকরা জানায়, বরাক উপত্যকার পুলিশের সাথে তাদের কোনও পরিচয় নেই। তাই বাটুলকে গুয়াহাটি নিয়ে গিয়ে পুলিশের কাছে দেবে বলে তাঁরা ভেবেছিলেন। করিমগঞ্জ পুলিশের ধারণা, লরিচালকরা যদি বাটুল মিয়ার গতিবিধি আঁচ করতে না পারত তাহলে হয়ত তাদের খুন করে গাড়ি নিয়ে যেত গাড়ি ছিনতাই চক্র। পুলিশ এও জানিয়েছে, বাটুল মিয়া গাড়ি ছিনতাই চক্রের মদতদাতা হিসেবে কাজ করে বলেই তাদের সন্দেহ। কেননা ভাগা বাজার এলাকাতে একটি গাড়ি চুরি চক্র সক্রিয় রয়েছে। বাটুল মিয়ার বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করতে করিমগঞ্জ পুলিশ শিলচর পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছে।