Advertisement
E-Paper

‘বাস-দুর্নীতি’তে এ বার সিবিআই তদন্ত দিল্লিতে

কেজরীওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক হাজার লো ফ্লোর বাস কেনার সময় দরপত্র ডাকা ও নিলামের ক্ষেত্রে যাবতীয় নিয়ম ভাঙা হয়েছিল।

সংবাদসংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০০
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই

আবগারি কেলেঙ্কারি নিয়ে অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই আরও এক কেলেঙ্কারির অভিযোগে দিল্লির আপ সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। আবগারি কেলেঙ্কারির মতো এ বারেও উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার সুপারিশের ভিত্তিতে দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের জন্য লো-ফ্লোর (নিচু পাদানি যুক্ত বাস) বাস কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। আবগারি কেলেঙ্কারির তদন্তে নিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে থাকা দিল্লির আম আদমি পার্টির সরকার এর পিছনে কেন্দ্র এবং বিজেপির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেও বিরোধী বিজেপি এবং কংগ্রেসের নেতাদের অভিযোগ, রাজনীতিতে স্বচ্ছতার কথা বলে দিল্লির ক্ষমতায় আসা সরকারের দুর্নীতি এ বারে সামনে আসতে শুরু করেছে।

কেজরীওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক হাজার লো ফ্লোর বাস কেনার সময় দরপত্র ডাকা ও নিলামের ক্ষেত্রে যাবতীয় নিয়ম ভাঙা হয়েছিল। চলতি বছর জুন মাসে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছিল দিল্লির উপরাজ্যপাল সাক্সেনার কাছে। বিষয়টি নিয়ে দিল্লির মুখ্যসচিব নরেশ কুমারের বক্তব্য জানতে চান উপরাজ্যপাল। তার পরিপ্রেক্ষিতে নরেশ কুমার গত মাসে উপরাজ্যপালের কাছে তাঁর রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তদন্তের সিবিআইকে দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্তের সুপারিশ করেন উপরাজ্যপাল।

অভিযোগ, দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (ডিটিসি) মাধ্যমে ওই বাসগুলি কেনার জন্য দরপত্র ডাকা দরপত্র সংগ্রহ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কেজরীওয়াল সরকারের পরিবহণমন্ত্রী কৈলাস গহলৌতের নিয়োগ ছিল ‘পূর্বপরিকল্পিত’। বাসগুলি কেনার ক্ষেত্রে অনিয়মকে ‘সহজতর’ করার জন্যই ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে দিল্লি ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট সিস্টেম (ডিআইএমটিএস)-কে নিয়োগ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে ১,০০০টি লো-ফ্লোর বিএস-৪ এবং বিএস-৬ বাস কেনার জন্য দরপত্র ডাকা, ২০২০ সালের মার্চে বিএস-৬ বাস কেনা এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তির জন্যও নিয়ম ভাঙা হয়েছিল। এই সব অভিযোগ নিয়ে গত ১৯ অগস্ট উপরাজ্যপালের কাছে মুখ্যসচিব যে রিপোর্ট জমা দেন, তাতেও বেশ কিছু ‘অনিয়ম’-এর উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে অভিযোগে বলা হয়েছে, ডিআইএমটিএস এবং ডিটিসি-র দরপত্র সংক্রান্ত কমিটি দরপত্রগুলি সঠিক ভাবে মূল্যায়নই করেনি। এর আগে এই সংক্রান্ত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার ও পি আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বছর অগস্টেই তাদের জমা দেওয়া রিপোর্টে দরপত্র এবং ক্রয় পদ্ধতিতে ত্রুটির জন্য কেজরীওয়ালের সরকারকে অভিযুক্ত করেছিল।

সিবিআই ইতিমধ্যেই এই বাসগুলি কেনা এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত চুক্তিগুলি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত চালাচ্ছে। তার মধ্যেই উপরাজ্যপাল নতুন অভিযোগগুলিকেও যুক্ত করার জন্য সিবিআই-কে অনুমোদন দিয়েছেন।

উপরাজ্যপালের এই নির্দেশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সরব হয়েছে আপ সরকার। কেজরীওয়াল সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘বাস কখনও কেনাই হয়নি, দরপত্রও বাতিল করা হয়েছিল। দিল্লির একজন শিক্ষিত উপরাজ্যপাল দরকার। কিসে তিনি সই করছেন, এই ব্যক্তি সেটাই জানেন না! উপরাজ্যপালের বিরুদ্ধেই একাধিক গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নজর ঘোরাতে উনি এই সব তদন্ত করাচ্ছেন। এখনও অবধি কোনও তদন্তেই কোনও ফল হয়নি। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী এবং সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরে এ বারে চতুর্থ এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে উনি অভিযোগ করলেন।’’ আপের দাবি, টাকা দিয়েও তাদের বিধায়ককে কিনে দিল্লিতে সরকার গড়তে ব্যর্থ হয়েই প্রতিশোধ নিতে মরিয়া বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সে কারণেই বারবার এ ভাবে দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

CBI Delhi AAP Government Corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy