Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কারচুপি নিয়ে রাজীবদের নামে নয়া হলফনামা

সারদা-রোজ ভ্যালি কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের চারটি মোবাইল নম্বরের ‘কল রেকর্ডস’ চেয়েছিল সিবিআই।

রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।

রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

সারদা-রোজ ভ্যালি কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের চারটি মোবাইল নম্বরের ‘কল রেকর্ডস’ চেয়েছিল সিবিআই। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের দফতর থেকে তা সিডি-বন্দি করে পাঠিয়েও দেওয়া হয় সিবিআইয়ের কাছে। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, অফিসাররা সেই সিডি খুলে দেখেন, সেটি ফাঁকা। তাতে কোনও তথ্যই নেই। ফের সেই তথ্য চাওয়া হলে যে সিডি মেলে, সিবিআইয়ের দাবি, দেখা যায় তাতে কারচুপি করা হয়েছে। অর্থাৎ, সুদীপ্ত সেন কার কার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তার অনেক তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে।

প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি-র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নতুন হলফনামা জমা দিয়ে আজ এই অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুরু হওয়া তদন্তে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন বাধা দিচ্ছে বলে সিবিআই ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছিল। তা আরও জোরদার করতে সিবিআইয়ের এই নতুন হলফনামা।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানির আগে আজ রাজীব, মুখ্যসচিব ও ডিজি-র তরফেও নতুন হলফনামা জমা পড়েছে। তাতে রাজ্যের কর্তারা যুক্তি দিয়েছেন, আদালত অবমাননার মামলায় একবারই অভিযোগ তোলা যায়। বারবার নতুন নতুন তথ্যপ্রমাণ জমা করা যায় না।

সারদা-রোজ ভ্যালির তদন্তে গঠিত সিট-এর প্রধান হিসেবে রাজীব সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট করেছিলেন বলে সিবিআই আগেই অভিযোগ তোলে। তার জবাবে রাজীব জানিয়েছিলেন, তিনি তদন্তের দেখভাল করেননি। তিনি শুধু প্রশাসনিক সমন্বয়ের কাজ করেছিলেন। তাঁর হেফাজতে তদন্তের সাক্ষ্যপ্রমাণ ছিল না।

যদিও আজ সিবিআইয়ের কলকাতা শাখার এসপি পি সেফাস কল্যাণ ২০১৩-য় সিট গঠনের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি দেখিয়েই দাবি করেছেন, রাজীবই তদন্তের দৈনন্দিন দেখাশোনা করতেন। সিবিআই-এর অভিযোগ, সিট সঠিক ভাবে তদন্ত করেনি। সিট যা করেছে বা করেনি, তার জন্য রাজীবই দায়ী।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাসভবনে সিবিআই অফিসারদের হেনস্থার পরেই সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। রাজীব ও বাকিদের দাবি ছিল, কোনও হেনস্থা হয়নি। বরং সিবিআই অফিসারদের শেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে গিয়ে চা খাইয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছিল। এর পুরোটাই মিথ্যা বলে দাবি করেছে সিবিআই। ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা সিবিআইয়ের ডিএসপি তথাগত বর্ধন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা জানিয়ে পৃথক হলফনামা জমা করেছেন। সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তবও হলফনামায় দাবি করেছেন, তাঁর বাড়ি ঘেরাও করা হয়েছিল। এর সঙ্গে রাজ্যের পুলিশ অফিসারদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্নায় বসার অভিযোগ প্রমাণে সিবিআই ছবি-ভিডিয়ো সহ সিডি জমা দেওয়ার অনুমতি চেয়েছে। ধর্নায় বসায় অভিযোগও রাজীবরা অস্বীকার করেছিলেন।

অসহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণ করতে সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর তাঁদের জানানো হয়, বিধাননগরের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় সারদা-রোজভ্যালির তদন্তে আটক ৩৬৭টি পণ্য রয়েছে। কিন্তু থানায় যাওয়ার পর তাঁদের বলা হয়, মালখানায় এমন কিছু নেই। কিন্তু বহু চেষ্টার পরে সেই থানাতেই ওই সব পণ্যের সন্ধান পান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE