Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জবাবি আক্রমণে রাজনাথ

সিবিআই অফিসারদের ওপর বলপ্রয়োগে অভিযুক্ত রাজ্যের আইপিএস-দের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে কেন্দ্র।

রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।

রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫১
Share: Save:

সিবিআই-কলকাতা পুলিশ সংঘাতে তৃণমূলের পাশে গোটা বিরোধী শিবির। কার্যত এক ঘরে হওয়া বিজেপি তাই পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা অবনতির প্রশ্ন তুলে পাল্টা আঘাতের সিদ্ধান্ত নিল। আজ দুপুরে মোদী সরকার সংসদে বলে— পশ্চিমবঙ্গে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে গত কালের ঘটনা।

কালকের ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর রিপোর্টও সন্ধ্যায় দিল্লিতে এসে পৌঁছয়। সেই রিপোর্টের বিষয়বস্তু কী, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে সব মহলেই। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে গত রাতেই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি না, তাঁদের কাছে তা জানতে চান রাজ্যপাল। প্রশাসনের কর্তারা জানান— ওই ঘটনায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে বটে, কিন্তু গোটা রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি আদৌ তৈরি হয়নি। তাঁরা বলেন, সিবিআই অফিসারদের অতি সক্রিয়তার কারণেই ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখন রাজ্য প্রশাসনের কাছে আশঙ্কার বিষয়— রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে রাজ্যপাল রিপোর্ট দিয়েছেন কি না। সে ক্ষেত্রে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সুযোগ তৈরি হবে কেন্দ্রের হাতে। তবে রাজনৈতিক শিবির মনে করে, ভোটের আগে সে কাজ করে বিরোধীদের হাত শক্ত করতে যাবেন না মোদী-শাহ। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের মতে, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের কোনও ভাবনাই নেই সরকারের।

তৃণমূলনেত্রী গত কালের মতো আজও ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন— কেন্দ্র ৩৫৫ বা ৩৫৬, যে ধারাই প্রয়োগ করুক, রাজনৈতিক ভাবে তার মোকাবিলা করবে দল। ওই ধারা প্রয়োগ করে রাজ্যের শাসন কেন্দ্র হাতে নিলে তাঁদের সুবিধা হবে বলেই মনে করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

গত কালই বিজেপি নেতৃত্ব ঠিক করেন, কলকাতার ঘটনার নিন্দা করে সর্বাত্মক ভাবে আক্রমণে নামবে দল। তাই প্রশাসনিক ভাবে সক্রিয় হওয়ার সঙ্গে সংসদেও সরব হয় শাসক শিবির। সিবিআই-কলকাতা পুলিশের সংঘাতের ঘটনা বেনজির বলে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘গত কালের ঘটনা ওই রাজ্যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ওই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্যও বিপদ।’’

অন্য দিকে এককাট্টা বিরোধীরা পাল্টা অভিযোগে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে নষ্ট করতে তৎপর রয়েছেন মোদী-শাহ জুটি। সিবিআইয়ের সমর্থনে রাজনাথের বক্তব্য, ‘‘সিবিআইয়ের অফিসারেরা এমনি পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে যাননি। কমিশনার লাগাতার অসহযোগিতা করছিলেন। বার বার সমন পাঠানোর পরেও হাজির হননি। পরিস্থিতি এমন হয় যে সিবিআই অফিসারদের সুরক্ষার জন্য সিআরপি মোতায়েন করতে হয়। তাই রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’

সিবিআই অফিসারদের ওপর বলপ্রয়োগে অভিযুক্ত রাজ্যের আইপিএস-দের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে কেন্দ্র। গত কালের ঘটনায় যুক্ত রাজীব কুমার-সহ একাধিক আইপিএস অফিসারের ভূমিকাও তদন্ত করে দেখছে তারা। মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, চাকরির নিয়মানুযায়ী আইপিএস-রা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে থাকতে পারেন না। কিন্তু কাল মেট্রো চ্যানেলে মমতার ধর্না মঞ্চে রাজীব কুমার-সহ বহু আইপিএস-কে দেখা যায়। এ সব নিয়ে এ দিন নির্বাচন কমিশনেও নালিশ জানিয়েছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE