বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়ক। —ফাইল চিত্র।
যাঁদের সমর্থন প্রত্যাশিত ছিল, তাঁদের পাশে থাকার বার্তা আসছিল গত কাল রাত থেকেই। আজ তাঁরা একে একে কলকাতায় পৌঁছতে শুরু করলেন। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না আন্দোলনে এল ‘অপ্রত্যাশিত’ সমর্থনও। বিজু জনতা দলও তাদের সমদূরত্ব রেখে চলার নীতি ছেড়ে পাশে দাঁড়াল তৃণমূলের। লোকসভায় কড়া সমালোচনা করল মোদী সরকারের। ধর্নামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতাও জানান, বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়ক তাঁকে ফোন করেছেন।
এ দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মেট্রো চ্যানেলে ধর্নামঞ্চে পৌঁছন লালুপ্রসাদের ছেলে, আরজেডির তেজস্বী যাদব এবং করুণানিধির কন্যা, ডিএমকের কানিমোঝি। দিল্লিতে শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরীবাল, চন্দ্রবাবু নায়ডু, ডেরেক ও’ব্রায়েন-সহ বিরোধী শিবিরের নেতারা নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে পরবর্তী রণনীতি নিয়ে প্রাথমিক এক দফা আলোচনা করেন। এই বিরোধী নেতাদেরও অনেকে খুব শীঘ্র কলকাতায় যাবেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, একমাত্র সিপিএম বাদে সব বিরোধী দল মমতার পাশে এসে দাঁড়ানোয় প্রবল চাপে পড়ে গেল বিজেপি।
গত কালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ আজ দফায় দফায় অচল করে দেন তৃণমূলের সাংসদেরা। ওয়েলে তাঁরা পাশে পেয়েছেন টিডিপি, আরজেডির মতো বিরোধী দলগুলিকে। টুইট করে, ফোনে বা সরাসরি কলকাতায় ধর্নামঞ্চে গিয়েও মোদীর বিরুদ্ধে একসুরে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন অনেকে। বিকেলে সংসদেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির বৈঠক হয় বিষয়টি নিয়ে।
আরও পড়ুন: পাল্টা চাপের কৌশল! সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টরকে নোটিস ধরাল কলকাতা পুলিশ
লোকসভায় দিনের শুরুতেই তোপ দাগা শুরু করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। গত রাতের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘বেআইনি এবং রাজনৈতিক ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজ্য দখলের জন্য। কিন্তু এই কাজে তারা সফল হবে না। নরেন্দ্র মোদীজি, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ যত বারই বাংলায় যান না কেন, ফলাফল বড় একটি শূন্য ছাড়া কিছুই হবে না। কেন্দ্র যেটা করেছে তাতে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে।’’ মমতার ধর্নাকে ‘সত্যাগ্রহ’ আখ্যা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে এই সরকার সমানে সিবিআইকে ব্যবহার করছে। ব্রিগেডের বিরোধী সমাবেশের পরই বিশেষ করে এই পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। এমন ঘটনা দেশে বিরল।
তেজস্বী কলকাতায় বলেন, ‘‘১৯ জানুয়ারি কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল সভা দেখে মোদী ভয় পেয়েছেন। সে জন্যই ওঁর পিছনে লেগেছেন। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে যে মামলা, তাতে সিবিআইয়ের হাতে তথ্য নেই। থাকলে আজই আদালতে পেশ করত।’’ আর কানিমোঝি বলেন, ‘‘দল এবং স্ট্যালিনের তরফ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন। যে ভাবে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তারই ‘পুরস্কার’ হিসেবে ওঁর বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়েছেন মোদী। ১৯ জানুয়ারির সভা দেখে ওঁরা বুঝে গিয়েছেন, এখানে একটি আসনও পাবেন না।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মমতার সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে লড়ব। সকালে স্ট্যালিন ফোন করেও একই কথা বলেছেন মমতাকে।’’
দিল্লিতে তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, বিজেডিকে পাশে পাওয়াটা ‘অপ্রত্যাশিত’ ‘সুখকর অভিজ্ঞতা’। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘একমাত্র সিপিএম বাদে আমরা সব বিরোধী দলের সমর্থন পেয়েছি। বিজেডি সাধারণত সমদূরত্ব বজায় রেখে চলে। কিন্তু আজ বিজেডি সাংসদ ভ্রাতৃহরি মাহতাব যে বক্তৃতা দিয়েছেন, তাতে কোনও দ্বিধা ছিল না। কেন্দ্র যে ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করছে ভ্রাতৃহরি তার প্রভূত নিন্দা করেছেন বক্তৃতায়।’’
তৃণমূলের রাজ্যসভা নেতা ডেরেক দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, কারা ফোনে কথা বলেছেন দলনেত্রীর সঙ্গে, কারা যাচ্ছেন কলকাতায় ধর্নামঞ্চে। এসপি নেতা অখিলেশ যাদব পাঠিয়েছেন কিরণময় নন্দকে। মায়াবতী ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। অজিত সিংহ, জয়ন্ত চৌধরি, মেহবুবা মুফতি, এইচ ডি কুমারস্বামীও কথা বলেছেন মমতার সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy