ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে মোবাইল চার্জার দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল হরিয়ানার কংগ্রেস নেত্রী হিমানী নরওয়ালকে। তদন্তের পর এমনই দাবি করছে পুলিশ। এই ঘটনায় সচিন নামে এক যুবককে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার রাতের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তি কালো রঙের একটি ট্রলিব্যাগ টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। রাত তখন সাড়ে ১০টা।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, হিমানীকে খুনের পর দেহ তাঁরই ট্রলি ব্যাগে ভরে হেঁটে বেরিয়ে যান অভিযুক্ত সচিন। পুলিশ জানতে পেরেছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার সময় হিমানীর রোহতকের বাড়িতে এসেছিলেন অভিযুক্ত। সেখানেই রাত কাটান। ২৮ ফেব্রুয়ারি কোনও একটি বিষয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি হয়। তাঁদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। সেই সময় সচিনের হাতে চোট লেগে কেটে যায়। সেই রক্ত বিছানার চাদরে লেগে গিয়েছিল।
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, প্রমাণ লোপাটের জন্য সেই চাদর হিমানীর দেহের সঙ্গে ট্রলিব্যাগে ভরেছিলেন সচিন। হিমানীকে খুনের পর তাঁর সোনার হার, আংটি সব খুলে নেন। মোবাইল, ল্যাপটপ এবং সেই গয়না একটি ব্যাগে ভরে হিমানীর স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে যান অভিযুক্ত। নিজের গ্রামে গিয়ে সেগুলি তাঁর দোকানে রেখে আসেন সচিন। তার পর আবার রাত ১০টা নাগাদ রোহতকে ফিরে আসেন। হিমানীর স্কুটি বাড়ির বাইরে রাখেন। তার পর ঘরে ঢুকে হিমানীর দেহসমেত ট্রলিব্যাগটি নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মূল রাস্তার দিকে চলে যান। তার পর একটি অটো ভাড়া করেন। সেই অটো নিয়ে সাম্পলা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছোন সচিন। অটোর ভাড়া মিটিয়ে সেটিকে ছেড়ে দেন। তার পর সেই ট্রলিব্যাগটি সকলের নজর এড়িয়ে হাইওয়ের ধারে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দিয়ে বাস ধরে দিল্লিতে পালিয়ে যান অভিযুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় অভিযুক্ত নিজেকে হিমানীর প্রেমিক বলে দাবি করেছেন। কিন্তু তাঁর দাবি কতটা সত্য তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্ত এটাও দাবি করেছেন যে, তাঁকে ব্ল্যাকমেল করে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছিলেন হিমানী। সে কারণেই কি খুন, না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সোমবারই হিমানীর শেষকৃত্য করেছে তাঁর পরিবার।