E-Paper

বিমার ভাবনা কেন্দ্রের, দিনের শর্তে আপত্তি গিগ-কর্মীদের

রাজস্থান, তেলঙ্গানা, কর্নাটকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকার গিগ কর্মী ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা, জীবন বিমার মতো সামাজিক সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে আইন তৈরি করেছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫২

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেউ আজ জ়োম্যাটোর হয়ে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন। তিনিই আবার প্রয়োজন পড়লে পর দিন অ্যামাজ়ন বা ফ্লিপকার্টের হয়ে বাইকে চেপে জিনিসপত্র নিয়ে ছুটছেন। আজ যিনি ওলা বা উবেরের হয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন, তিনি পর দিন সুইগি-র হয়ে খাবার পৌঁছনোর কাজ করছেন। ঠিক এই কারণেই এইসব গিগ-কর্মী বা অ্যাপ-ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কর্মীরা তাঁদের সামাজিক সুরক্ষা পেতে কোনও ন্যূনতম কাজের দিনের শর্ত রাখতে চাইছেন না।

রাজস্থান, তেলঙ্গানা, কর্নাটকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকার গিগ কর্মী ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা, জীবন বিমার মতো সামাজিক সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে আইন তৈরি করেছে। এ নিয়ে চাপের মুখে মোদী সরকারও দ্রুত গিগ-কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা চালু করতে চাইছে। কারণ, গিগ-কর্মীদের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে তা নতুন ভোটব্যাঙ্ক হয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া ইতিমধ্যেই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সংস্থাগুলির কর্তা এবং গিগ-কর্মীদের সংগঠনের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেছেন। কী ভাবে বিমা, পেনশনের মতো সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা যায়, তার তহবিল কী ভাবে তৈরি হবে, তা দেখতে কমিটিও তৈরি হয়েছে।

সরকারি সূত্রের খবর, সেই কমিটিতে কিছু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, জীবন বিমা, দুর্ঘটনা বিমা, স্বাস্থ্য বিমা বা পেনশনের মতো বন্দোবস্ত করার আগে বছরে ন্যূনতম ৯০ দিন বা তিন মাস কাজ করতে হবে বলে শর্ত বেঁধে দেওয়া হোক। কিন্তু এতে গিগ-কর্মীরা আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক গাড়ি চালক একইসঙ্গে ওলা-উবেরের গাড়ি চালান। অনেকে আবার একদিন ওলা-র হয়ে গাড়ি চালিয়ে পরের দিন উবের-এর গাড়ি চালান। কেউ হয়তো আজ জ়োম্যাটো বা সুইগি-র হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু রোজগার কমে গেলে অ্যামাজ়ন বা ফ্লিপকার্টের হয়ে কাজ করেন। এই পরিস্থিতিতে এমন শর্ত বেঁধে দেওয়া উচিত হবে না।

কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘এটা ঠিক, উন্নত দেশের সঙ্গে ভারতের গিগ-কর্মীদের মধ্যে ফারাক রয়েছে। উন্নত দেশে কেউ পাকা চাকরি করে বাড়তি রোজগারের জন্য দিনের বা মাসের কিছুটা সময় গিগ-কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু এ দেশে অধিকাংশ ওলা-উবের চালক ও ডেলিভারি বয়দের এটাই প্রধান রোজগার।’’

নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-২১-এ দেশে গিগ-কর্মীর সংখ্যা ছিল ৭৭ লক্ষ। ২০২৯-৩০-এ তা ২ কোটি ৩৫ লক্ষে পৌঁছে যাবে বলে অনুমান। গিগ-কর্মীদের সংগঠন আইএফএটি (ইন্ডিয়ান ফেডারেশন অফ অ্যাপ-বেসড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স)-এর জাতীয় সম্পাদক শেখ সালাউদ্দিনের বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, গিগ-কর্মীদের অভিন্ন পরিচয়পত্র হোক। তার মাধ্যমে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হোক। কোনও কর্মী এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গেলে যেন সুবিধা বজায় থাকে। অ্যাপ-সংস্থাগুলি কর্মীদের কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের ই-শ্রম পোর্টাল বা রাজ্য সরকারের পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করার দায়িত্ব নিক। কোন কর্মী কতক্ষণ কাজ করছেন, কত রোজগার করছেন, সে তথ্য যেন সরকার, কর্মীদের দেওয়া হয়। ন্যূনতম আয়, কর্মীদের অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত হোক। মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তার দিকও যেন নজরে থাকে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gig Workers Insurance Policy Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy