প্রথম বার ক্ষমতায় এসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেকার যুবকদের চাকরির যোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণে জোর দিয়েছিলেন। ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট’-এর জন্য তৈরি হয়েছিল পৃথক মন্ত্রক। চালু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র যোজনা। রাজ্যে রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। সেই সব কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গত সাত বছরে গড়ে ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ১৭ জন চাকরি পেয়েছেন। কেন্দ্রগুলিতে প্রশিক্ষকদের পদ খালি পড়ে থাকলেও সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু জানা নেই। শিল্পে নিয়োগের প্রশিক্ষণ দেওয়া আইটিআই-গুলিতেও প্রায় ৬৫ শতাংশ পদ খালি।
কেন? কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, আইটিআই-তে প্রশিক্ষক নিয়োগ রাজ্য সরকারের বিষয়। আর কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র খুলেছে একাধিক বেসরকারি সংস্থাই। সেখানে প্রশিক্ষক নিয়োগ তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
সংসদের চলতি অধিবেশনে দক্ষতা প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্ট বলছে, ২০১৫ থেকে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা চালু হয়েছে। তিন দফায় এই প্রকল্প চলেছে। এখন চতুর্থ দফার প্রকল্প চালু হবে। গোটা দেশে ৮১৮টি প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাকে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলতে অল্প সুদে ৭০ লক্ষ টাকার গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে।
আইটিআই-গুলির কী অবস্থা? রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৪,৯৫৬টি আইটিআই রয়েছে। ২ লক্ষ ৫ হাজার ৬৩৫টি প্রশিক্ষকের অনুমোদিত পদ রয়েছে। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ২৫১টি পদই খালি।
প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি মিলছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সংসদে পেশ করা সরকারের তথ্য বলছে, তিন দফায় এই কেন্দ্রগুলি থেকে ১ কোটি ৩৭ লক্ষের বেশি তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু মাত্র ২৪ লক্ষ ৩৬ হাজার মতো প্রশিক্ষিত চাকরি পেয়েছেন। সাফল্যের হার মাত্র ১৭.৭%। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতে ৪.১১ লক্ষের মধ্যে মাত্র ৬৯ হাজার ২০৯ জন চাকরি পেয়েছেন, অর্থাৎ মাত্র ১৬.৮%। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে সাফল্যের হার বেশি। রাজ্যে ১.১৫ লক্ষ প্রশিক্ষিতের মধ্যে প্রায় ১৯% চাকরি পেয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)