পোশাকি নাম ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ (এএমসিএ)। আদতে ভারতের প্রতিরক্ষাশিল্পের ইতিহাসে প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির উদ্যোগ। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এ সংক্রান্ত ‘প্রোগ্রাম এগ্জ়িকিউশন মডেল’ অনুমোদন করেছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’ (হ্যাল)-এর পাশাপাশি এএমসিএ নির্মাণের বরাত পেতে এ বার বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও দরপত্র দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
চিনের তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ‘জে-১০সি’র মোকাবিলার উদ্দেশ্যেই দ্রুত এএমসিএ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে কেন্দ্র। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে ‘দ্য প্রিন্ট’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০৩১ সালের মধ্যেই পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নির্মাণ এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, ‘অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ (এডিএ) শিল্প অংশীদারির মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত।
চুক্তি অনুযায়ী চতুর্থ প্রজন্মের হালকা ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ তেজস যুদ্ধবিমান সময়মতো সরবরাহ করতে ‘হ্যাল’ ব্যর্থ হয়েছে বলে কয়েক মাস আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিংহ। এই আবহে হ্যালের পক্ষে সময়সূচি মেনে এএমসিএ নির্মাণ সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে অংশীদারির ভিত্তিতে প্রকল্পের বরাত বণ্টন হতে পারে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘স্বাধীন ভাবে কিংবা যৌথ উদ্যোগে অথবা কনসোর্টিয়াম হিসাবে দরপত্র জমা দেওয়া যেতে পারে।’’
এত দিন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালই একচেটিয়া ভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে সামরিক বিমান এবং হেলিকপ্টার নির্মাণের বরাত পেয়েছে। এ বার টাটা, আদানি বা ‘এল অ্যান্ড টি’র মতো সংস্থার সঙ্গে তাদের প্রতিযোগিতায় নামতে হতে পারে বলে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওই সূত্র জানাচ্ছে, পঞ্চম প্রজন্মের ওই যুদ্ধবিমানটিতে শত্রুপক্ষের রেডার নজরদারি ফাঁকি দেওয়ার ‘স্টেলথ্’ প্রযুক্তি সংযোজিত হবে। এর ইঞ্জিন তৈরির জন্য ফ্রান্সের একটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। পুরো প্রকল্পটির নজরদারির দায়িত্বে থাকবে ‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা’ (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন বা ডিআরডিও)।