Advertisement
E-Paper

সংযত না হলে সর্বাত্মক সংঘাত, এ বার সরাসরি যুদ্ধের হুমকি চিনের

ডোকা লা-র সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে চিন। সেখানেই বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ডোকা লা এলাকায় ভারতীয় সেনার ‘অনুপ্রবেশ’-এর জবাব দিতে অনন্তকালের জন্য ধৈর্য ধরতে রাজি নয় তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:১১
ডোকলাম নিয়ে টানাপড়েন শুরুর পর থেকে সামরিক আস্ফালন ক্রমশ বাড়াতে শুরু করেছে চিন। —প্রতীকী ছবি।

ডোকলাম নিয়ে টানাপড়েন শুরুর পর থেকে সামরিক আস্ফালন ক্রমশ বাড়াতে শুরু করেছে চিন। —প্রতীকী ছবি।

ডোকা লা-র টানাপড়েনের মধ্যে ভারতকে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দিল চিন। তবে নয়াদিল্লি মনে করছে, পরিস্থিতি এখনও এমন জায়গায় পৌছয়নি, যাতে ভারত যুদ্ধে যেতে বাধ্য হয়।

ডোকা লা-র সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে চিন। সেখানেই বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ডোকা লা এলাকায় ভারতীয় সেনার ‘অনুপ্রবেশ’-এর জবাব দিতে অনন্তকালের জন্য ধৈর্য ধরতে রাজি নয় তারা। চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এও ভারতকে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘ভারত যদি সংঘাত বাড়িয়ে যায়, তা হলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) জুড়ে সর্বাত্মক সংঘাতের পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে তাদের। চিন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তবে যুদ্ধে যেতে ভয়ও পাচ্ছে না, দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধের জন্যও বেজিং প্রস্তুত।’’ সুর চড়িয়ে মঙ্গলবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং মন্তব্য করেছেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে কাউকে নিশানা করতে গিয়ে ভারত যেন ডোকা লা-এ অনুপ্রবেশকে তাদের নীতি হিসেবে না দেখে।’’

যুদ্ধের হুমকির মধ্যেও নয়াদিল্লি অবশ্য কূটনৈতিক পথেই সমাধানের আশা করছে। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ দিন চিন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর ব্যাখ্যা দেন, ডোকা লা-য় সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়নি, যাতে ভারত চিনের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। তবে পরিস্থিতি ‘স্পর্শকাতর’ বলেই জানান বিদেশসচিব। জয়শঙ্কর বলেন, চিন সব সময়েই সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে থাকে। যদিও এ বার তারা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। বিদেশসচিব জানান, ভারত ধীরে সুস্থে পদক্ষেপ করতে চাইছে, জোর দিচ্ছে কূটনীতির পথে।

আরও পড়ুন: নাম না করে মমতাকে খোঁচা জয়শঙ্করের

সিকিম সীমান্তে ডোকা লা-য় ভারত ও চিনের সেনা প্রায় এক মাস মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। ১৯৬২ সালের পরে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে চিন জানিয়েছে, যত ক্ষণ না সেনা সরাচ্ছে ভারত, তত ক্ষণ কূটনীতির পথে এগোনোর প্রশ্ন নেই। এ দিনের বৈঠকে রাহুল গাঁধী এনডিএ সরকারের থেকে জানতে চান, চিন কি ভুটানকে ভয় দেখাচ্ছে যে তারা যদি থিম্পুকে আক্রমণ করে, তা হলে নয়াদিল্লির পক্ষে বাঁচানো সম্ভব হবে না? রাশিয়া, ইরানের মতো পুরনো বন্ধু দেশগুলিকেও নয়াদিল্লি পাশে পাচ্ছে না কেন, সে প্রশ্ন তোলেন অমেঠীর সাংসদ। সিপিএমের মহম্মদ সেলিমও জানতে চান, নয়াদিল্লির দীর্ঘদিনের বন্ধু প্রতিবেশী দেশগুলি ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে কেন? রাহুলের প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি বিদেশসচিব। তবে তাঁর ব্যাখ্যা, শুধু বর্তমান সরকারই নয়, ১৯৮৮ থেকেই ভারতের বিভিন্ন সরকার বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করতে চেয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে। সরকার যে চিনের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবছে না— বিদেশসচিব আজ সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। সূত্রের খবর, ডোকা লা-র পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সামনে ব্যাখ্যা দিচ্ছে ভারতও। যুদ্ধের পরিস্থিতি যে নেই, সে কথাই বোঝানো হচ্ছে। ভারতের দাবি, যা নিয়ে এত কিছু বলছে চিন, সেই এলাকাটিই ভুটানের। নয়াদিল্লির মতে, ডোকা লা-য় চিন রাস্তা তৈরি করলে ২৩ কিমি ‘চিকেন নেক’-এর খুব কাছেই লালফৌজের উপস্থিতি ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিরাট সমস্যা তৈরি করবে। কারণ, এই পথ দিয়েই দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগ রয়েছে।

India-China India China Doklam standoff চিন ভারত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy