জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সচ্ছল শ্রেণির বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পদক্ষেপ করেছে বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। তাঁর মতে, এ বার বিষয়টি নিয়ে সরকার ও সংসদের পদক্ষেপ করা উচিত।
আগামিকাল অবসর নেবেন প্রধান বিচারপতি। তার আগে আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই মন্তব্য করেছেন তিনি। গত বছরে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ তফসিলি জাতি ও জনজাতির মধ্যে উপশ্রেণি তৈরির সিদ্ধান্তে সায় দেয়। উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত প্রান্তিক মানুষের কাছেও সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। সেই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি গাভাই।
প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতি গাভাই-ই দ্বিতীয় দলিত। তাঁর কথায়, ‘‘সাম্যের সুবিধে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। অনেকে জনজাতি পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু তারা এখনও সংরক্ষণের সুবিধে পেয়ে চলেছে।’’
গত বছরের রায়েই বিচারপতি গাভাই লেখেন, ‘‘তফসিলি জাতি ও জনজাতির মধ্যে সচ্ছল অংশকে চিহ্নিত করার জন্য নীতি তৈরি করতে হবে রাষ্ট্রকে। ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে যে শ্রেণি তৈরি হয়েছে সেই শ্রেণির আওতা থেকে তাঁদের বার করে আনতে হবে। সেটাই প্রকৃত সাম্য তৈরির পথ।’’
অন্য দিকে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম প্রথায় স্বজনপোষণের অভিযোগ নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মতে, কোনও বিচারপতির আত্মীয়ের নাম বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের কাছে এসেছে এমন উদাহরণ মোট নিয়োগের ১০ শতাংশও নয়। তাঁর মতে, এক জন বিচারপতি পদপ্রার্থীর মেধাকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
সম্প্রতি এজলাসেই তাঁকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়েছিলেন এক আইনজীবী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি প্রধান বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষমা করতে পেরেছিলাম। কোনও পদক্ষেপ না করার সিদ্ধান্তটা তাৎক্ষণিকই ছিল।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছেন না বলেই কোনও বিচারপতি নিরপেক্ষ নন, এই ধারণা ঠিক নয়।’’
অবসরের পরে কিছু দিন বিশ্রাম নিতে চান প্রধান বিচারপতি। তার পরে যোগ দিতে চান সমাজসেবায়। তাঁর কথায়, ‘‘সমাজসেবা আমার রক্তেই আছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)