দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে বিদেশি হ্যান্ডলারের যোগ? তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, চিকিৎসক উমর-উন-নবির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সাঙ্কেতিক নাম (কোডনেম) ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই সাঙ্কেতিক নাম চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তকারীদের এক সূত্রের খবর, ‘উকাসা’— এই সাঙ্কেতিক শব্দের মাধ্যমে নির্দেশ আসছিল উমরের কাছে। ওই সূত্রের আরও দাবি, দিল্লির জঙ্গি মডিউলকে পরিচালনা করা হচ্ছিল ওই সাঙ্কেতিক নাম ব্যবহার করে। আর সেই নির্দেশ আসছিল তুরস্কের এক হ্যান্ডলারের কাছ থেকে।
তদন্তকারীদের ওই সূত্রের দাবি, এই ‘উকাসা’ই ফরিদাবাদের আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক উমর এবং তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিল। মূলত জইশ-ই-মহম্মদ এবং অনসার গজওয়াত-উল-হিন্দ— এই দুই জঙ্গি সংগঠনের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে উমরদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করছিল ‘উকাসা’ তথা তুরস্কের হ্যান্ডলার। উমরদের সঙ্গে ‘সেশন’ নামে একটি শক্তিশালী ‘এনক্রিপ্টেড’ অ্যাপের মাধ্যমে কথোপকথন চলত ওই সাঙ্কেতিক নাম ব্যবহার করে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের দাবি, ‘উকাসা’র অর্থ আরবিতে মাকড়সা বা মাকড়সার জাল। এটি হ্যান্ডলারের আসল নাম নয়। পরিচয় গোপন রাখতেই এই সাঙ্কেতিক নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ওই সূত্রের আরও দাবি, তদন্তে নেমে ‘উকাসা’র অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে এই কোড ব্যবহার করে উমরদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন চলছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, ‘উকাসা’ই দিল্লি জঙ্গি মডিউলের গতিবিধি, তাঁদের অর্থের জোগান দেওয়া এবং মগজধোলাইয়ের কাজ করছিল। তদন্তকারীদের ওই সূত্র বলছে, এই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে ২০২২ সালে উমর এবং তাঁর তিন সঙ্গীর তুরস্ক যাত্রার ফলে। যে কারণে, ‘উকাসা’ এবং উমরদের তুরস্ক যাত্রা, এই দু’টি ঘটনাকে জুড়ে দেখা হচ্ছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তকারীদের এক সূত্রের দাবি, ভারতের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা হয়েছিল ২০২২ সালে তুরস্কে বসেই। সেখানে উমর এবং তাঁর তিন সঙ্গী গিয়েছিলেন। আঙ্কারায় দু’সপ্তাহ ছিলেন উমরেরা। প্রথমে তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছিল টেলিগ্রামের মাধ্যমে। পরে সিগন্যাল এবং সেশন নামে অ্যাপ ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপনের কাজ চলত। ওই সূত্রের দাবি, আর সেই সময় উমরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল ‘উকাসা’ই। কী ভাবে স্লিপার সেলে নিয়োগ করতে হবে, কী ভাবে ডিজিটাল তথ্য লোপাট করতে হবে, সব বিষয়ে তাঁদের পরিচালনা করছিল ‘উকাসা’। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ভারতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের যে ছক কষা হয়েছিল এবং সেই হামলার জন্য যে জঙ্গি মডিউল তৈরি করা হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে ‘উকাসা’র বড় ভূমিকা রয়েছে।
তদন্তকারীদের এক সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দারা ‘উকাসা’র ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে এই হ্যান্ডলারের কোনও যোগ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা এখন এটাই খোঁজার চেষ্টা করছেন যে, কী ভাবে ‘ডক্টর মডিউল’কে পরিচালনা করা হচ্ছিল। আর নেপথ্যে সেই ‘উকাসা’ আসলে কে বা কারা।
প্রসঙ্গত, দিল্লির লালকেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর লালকেল্লার সামনে গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়।