এসআইআর আসলে ঘুরপথে এনআরসি বলে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ উঠল। মামলাকারীর আইনজীবীর যুক্তি, কোনও নির্বাচনী আধিকারিক নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে পারেন না।
নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। আজ মামলাকারীদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অভিযোগ করেন, ‘‘এসআইআর আন্দাজের ভিত্তিতে মানুষকে অস্থায়ী নাগরিকের তালিকায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তার পরে মানুষকে তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন নিজের হাতে এমন অধিকার তুলে নিয়েছে, যে অধিকার তাঁর নেই।’’
শুধু ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটার তালিকায় থাকতে পারেন বলে কমিশন এসআইআর প্রক্রিয়ায় প্রথম থেকে অবস্থান নিয়েছে। বার্তা দিয়েছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ না-মিললে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। আজ সিঙ্ঘভির যুক্তি, নাগরিকত্ব আইনের ৮ ও ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী শুধু কেন্দ্রীয় সরকার ও বিদেশি ট্রাইব্যুনাল আইনে আদালত নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে পারে। কোনও নির্বাচনী আধিকারিক এ কাজ করতে পারেন না। কারণ তা হলে সেটা এনআরসি-র সমান প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে।
এসআইআর-এর বিরুদ্ধে প্রধান মামলাকারী এডিআর-এর হয়ে আজ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ তুলেছেন, বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনকে ‘স্বৈরাচারী’ হিসেবে দেখছে। তা থেকে চোখ বুজে থাকা যায় না। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এই ধরনের মন্তব্য না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, মামলার পিটিশনে যা নেই, তা না বলাই ভাল। প্রশান্ত ভূষণ বলেছেন, এসআইআর নিয়ে তাড়াহুড়োর ফলে ৩০ জন বিএলও আত্মহত্যা করেছেন। কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?
পশ্চিমবঙ্গে বিএলও-দের উপরে চাপ নিয়ে আজ একটি নতুন মামলার উল্লেখ করেছেন এক আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, বিএলও-দের উপরে পরিকল্পিত ভাবে হামলা হচ্ছে। কমিশনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপকরতে হবে।
আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার আজ অভিযোগ করেছেন, বিহারে এসআইআর-এর ফলে ছয় শতাংশ মহিলা ভোটার বাদ পড়েছেন। ভোটার তালিকায় প্রতি হাজার জন পুরুষে মহিলাদের সংখ্যা ৯১৪ থেকে ৮৯২-তে নেমে এসেছে। বিয়ে, ঠিকানা বদলের ফলে মহিলাদের প্রয়োজনীয় নথি দিতে সমস্যা হচ্ছে। বিহারে মাত্র ২৮.৮ শতাংশ মহিলা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। কোনও মহিলার পক্ষে গ্রামের প্রধানের কাছে গিয়ে বংশাবলি জোগাড় করা কঠিন। এসআইআর-এ মহিলাদের জন্য কোনও সুরাহা রাখা হয়নি। শুধু নতুন ভোটার হিসেবে নাম তোলার আবেদন ছাড়া। আগামী ৪ ডিসেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)