বিহারে আসন সমঝোতা ঘোষণা হলেও, তা নিয়ে জটিলতা অব্যাহত এনডিএ-র অভ্যন্তরে। ফলে আজ আসনভিত্তিক এনডিএ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা শেষ পর্যন্ত তা থমকে যায়।
গতকাল আসন সমঝোতা ঘোষণার পরেই দিল্লিতে দলের সদর দফতরে প্রার্থী নাম চূডান্ত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক ছিল, আজ বিকেল ৪টেয় পটনায় ওই তালিকা ঘোষণা করবেন বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। কিন্তু আজ সকাল থেকেই দফায় দফায় বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতারা। সন্ধ্যায় জানানো হয় সাংবাদিক বৈঠক বাতিল। সূত্রের মতে, কাকে কোন আসন ছাড়া হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্য না হওয়ায় সাংবাদিক বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। বিশেষ করে শরিক দলগুলি এমন কিছু আসন বিজেপির কাছে দাবি করেছে, যা মানতে গেলে দলীয় প্রার্থীদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী গেরুয়া শিবির। যদিও সরকারি ভাবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ জায়সওয়াল বলেন, ‘‘একাধিক আরজেডি ও কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিতে যোগদান করতে চান। তাঁদের বিষয়টি মাথায় রেখেই আজ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়নি।’’
ঘটনাচক্রে, আজ মোহনিয়ার আরজেডি বিধায়ক সঙ্গীতা কুমারী ও বিক্রম বিধানসভার দু’দফার কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্ধার্থ সৌরভ বিজেপিতে যোগ দেন। দু’জনেই ওই দুই আসন থেকেই লড়তে চান। অন্য দল থেকে শেষ মুহূর্তে আসা বিধায়কদের জায়গা করে দেওয়া নিয়ে জটিলতাও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না-করার পিছনে বড় কারণ বলে জানিয়েছে দল। ১৭ অক্টোবর মনোননয় জমা দেওয়ার শেষ দিন। আগামী ১৬-১৮ অক্টোবর প্রচারে বিহারে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দল তাই চাইছে শাহের উপস্থিতিতে সম্রাট চৌধুরীর মতো হেভিওয়েট দলের মনোনয়ন জমা দিন।
সূত্রের মতে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন জেডিইউ নেতৃত্বও। এমনিতেই গত বারের চেয়ে ১৪টি আসন কম পেয়েছে নীতীশ কুমারের দল। বিজেপির চাপে জেডিইউয়ের অন্তত আটটি জয়ী আসন ছেড়ে দিতে হয়েছে শরিক চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপি-কে। যাতে অসন্তুষ্ট জেডিইউ। ওই আসনগুলির জয়ী বিধায়কদের কী ভাবে পুনর্বাসন দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে আজ বৈঠকে বসেছিলেন জেডিইউ নেতৃত্ব। তবে যে আসনগুলি নিয়ে আপাতত কোনও বিবাদ নেই, সেগুলির প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
গতকাল এনডিএ নেতৃত্ব জানান, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও জেডিইউ ১০১টি করে আসনে লড়বে। চিরাগের দলকে ২৯টি আসন দেওয়ার পাশাপাশি জিতনরাম মাঝির দল হাম ও উপেন্দ্র কুশওয়ার দল আরএলএম-কে ছ’টি আসন ছাড়া হয়। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই দুই দলের নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, আজ ওই দুই নেতার সঙ্গে আলাদা কথা বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন ধর্মেন্দ্র। যদিও দু’দলই কিছু আসনে নিজেদের প্রার্থীকে নির্দল হিসেবে দাঁড় করানোর কথা ভাবছেন বলে খবর। এ দিকে উত্তরপ্রদেশে এনডিএ-র আর এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির নেতা এবং পি রাজভড় বিহারে ১০টি আসনে লড়ার টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয় এই পরিস্থিতিতে তাঁদের আসন দেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষুব্ধ রাজভড় বিহারের ১৫৩টি আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ সংলগ্ন আসনগুলিতে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর দল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)