নোটের ধাক্কায় গেল গেল অবস্থা বিহারের মহাজোটের।
এক দিকে যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পঞ্জাবের আনন্দপুর সাহিবে যাচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সর্মথন করে পাশে দাঁড়াচ্ছেন, জাতীয় বিষয় নিয়ে নিয়মিত ভাবে আলোচনা চলছে মোদী ও নীতীশের, তখন জোটের অন্য নেতা লালু প্রসাদ সম্পূর্ণ অন্য মেরুতে দাঁড়িয়ে। এমনকী বুধবার পটনায় নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মমতার সভায় যখন লালু নিজের ছেলেদের পাঠাতে প্রস্তুত, তখন নীতীশ শিবির জানিয়ে দিয়েছে, সে দিন বিধানসভায় আবগারি বিল নিয়ে আলোচনা থাকায় প্রতিবাদ সভায় থাকতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী ওই সভায় প্রতিনিধিও হয়তো পাঠানো হচ্ছে না।
সরকারের শুরু থেকেই লালু-নীতীশ শিবিরে একাধিক বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা দিলেও, নোট বাতিলের প্রসঙ্গে কার্যত আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে পড়েছে মহাজোটের কুশীলবেরা। নীতীশ যখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সমর্থনে মুখ খুলে বিজেপির সঙ্গে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তখন লালু বিরোধিতায় সরব। পটনায় মমতার সভা নিয়ে গত কাল লালুর বাসভবনে দীর্ঘ ক্ষণ কথা হয় তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের। পরে লালু কথা বলেন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গেও। অসুস্থতার জন্য আরজেডি নেতা উপস্থিত থাকতে না পারলেও মমতার সভাকে নীতিগত ভাবে সমর্থন ও সাহায্যের আশ্বাস দেন। দলের প্রতিনিধি হিসেবে ছেলে তেজস্বী বা তেজপ্রতাপকে পাঠাতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে নীতীশ পটনার গর্দানিবাগের ওই সভাটি করার অনুমতি দিলেও, তা নিয়ে আগ্রহ দেখাননি। অথচ, কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে গত দু’বছরে বরাবরই পাশাপাশি ছিলেন মমতা-নীতীশ। কিন্তু নোট বাতিলের প্রশ্নে দু’জনের সেই সম্পর্কেও এখন শৈত্য। তবে নীতীশ শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি ইস্যুভিত্তিক। এই প্রশ্নে দুই দলের নীতি ভিন্ন। মমতা-নীতীশের সম্পর্ক একেবারে তিক্ত হয়ে পড়লে তো সভা করার অনুমতিই মিলত না। অনেকে বলছেন, নোট বাতিলের মতো বিষয় নিয়ে নীতীশ মমতার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করবেন না। নীতীশ প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার। সেই লক্ষ্য ছুঁতে গেলে তাঁর মমতার সমর্থন প্রয়োজন। বর্তমানে মোদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হলেও এই নয় যে নীতীশ মমতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিচ্ছেন।
আজ সকালে পঞ্জাবের আনন্দপুর সাহিবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছেন নীতীশ। সন্ধ্যায় মোহালিতে একটি অনুষ্ঠানে থাকার কথা তাঁর। সূত্রের খবর, মোদীর পাশাপাশি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছেন নীতীশ। আজ বেঙ্গালরুতে একটি সভায় কালো টাকা নিয়ে নীতীশের অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন অমিত, যা জল্পনায় আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। দু’তরফের এই ‘স্বাভাবিক সম্পর্ক’ নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। তিনি বলেন, ‘‘এর পরে আরজেডি কোন মুখে সরকারে রয়েছে বুঝতে পারছি না।’’ আরজেডি গোটা বিষয়টি নজরে রাখলেও মন্তব্য করতে চাইছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy