Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
জ়াকারবার্গকে চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি
Congresss

বিজেপি-ফেসবুক ঘনিষ্ঠতা ২০১২ থেকেই: কংগ্রেস

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি-ফেসবুক আঁতাঁতের শুরু দ্বিতীয় ইউপিএ জমানা শেষের মুখে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৬:২৯
Share: Save:

বিজেপির সঙ্গে ফেসবুকের যোগ কতটা গভীর? মার্কিন সংবাদপত্রে বিজেপি-ফেসবুক ঘনিষ্ঠতার বিবরণ প্রকাশ্যে আসার পরে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই দু’পক্ষের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের একাধিক ‘প্রমাণ’ উঠে এল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। যা তুলে ধরে ফেসবুকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জানিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলল কংগ্রেস।

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি-ফেসবুক আঁতাঁতের শুরু দ্বিতীয় ইউপিএ জমানা শেষের মুখে। অভিযোগ, তখন থেকেই ধীরে ধীরে বিজেপির অলিখিত মুখপত্রের কাজ করতে শুরু করে মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা। কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরার দাবি, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট এবং ফাঁস হওয়া ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ মেমো থেকে স্পষ্ট, ২০১২ থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে লবি করতে শুরু করে ফেসবুক এবং সেই সূত্রেই ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত আঁখি দাসের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের যোগাযোগ স্পষ্ট হয়। এই আঁখি দাসের বোন রশ্মি দাস আবার আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেত্রী। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির জয়ের পরে সেই নির্বাচনে ফেসবুকের বিপুল প্রভাবের কথা জানিয়েছিলেন আঁখি নিজেই। একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর তুলে ধরে পবন জানিয়েছেন, ফেসবুকের অনেক কর্মীই আঁখিকে মোদীর নাতনি বলে রসিকতা করতেন। ২০১৮ সালে মোদী দলের প্রত্যেক সাংসদের পেজে অন্তত ৩ লক্ষ লাইক জোগাড় করতে বলেছিলেন। ২০১৮-য় রাজস্থানে দলের সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের সম্মেলনে অমিত শাহ বলেছিলেন, সত্যি হোক বা মিথ্যে, আমরা যে-কোনও খবর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। এই প্রসঙ্গে অমিত নিজেই জানিয়েছিলেন কী ভাবে, ২০১৭ সালে বিধানসভা ভোটের আগে অখিলেশ যাদবের হাতে তাঁর বাবা মুলায়মের মার খাওয়ার একটি ভুয়ো খবর দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ৩২ লক্ষ কর্মীর দৌলতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পবনের দাবি, অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে খবর ফেসবুক চেপে দেয়। এর পরেই ২০১৭-য় ফেসবুকের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের গাঁটছড়া বাঁধা প্রসঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র জানান, তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ২০১৮-র মার্চে ফেসবুকের সঙ্গে গাঁটছড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানালেও ৪ দিনের মধ্যেই মত বদলে ফেলেন তিনি।

‘প্রমাণ’ তুলে ধরে শুধু অভিযোগ করা নয়। ফেসবুকের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সংস্থার কর্নধার মার্ক জ়াকারবার্গকে চিঠি লিখে কংগ্রেস নেতা কে সি বেনুগোপাল অবিলম্বে এ নিয়ে দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি করেছেন। সেই তদন্ত রিপোর্ট জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে বলে দাবি করার পাশাপাশি তদন্ত যাতে প্রভাবিত না-হয়, তা নিশ্চিত করতে তত দিন পর্যন্ত নতুন টিম দিয়ে কাজ পরিচালনার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। রাহুল গাঁধীও এ দিন ফের সুর চড়িয়ে বলেছেন, পক্ষপাতদুষ্ট এবং মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেশের কষ্টার্জিত গণতন্ত্রকে কলুষিত করার বিরুদ্ধে দেশের সব মানুষের সরব হওয়া উচিত। ফেসবুকের সঙ্গে শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর যোগাযোগ নিয়েও এ দিন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই নজরে ফেসবুকের ভারতীয় শাখার পাবলিক পলিসি এগজ়িকিউটিভ আঁখি দাস। তাঁর সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রমাণ হিসেবে একাধিক ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরেই আঁখি গত কাল অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি। আজ পাল্টা আঁখির বিরুদ্ধেই অভিযোগ করলেন ছত্তীসগঢ়ের সাংবাদিক আওয়েশ তিওয়ারি। তাঁর অভিযোগ, আঁখি দাস ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানছেন, মানুষকে তাতে উস্কানি দিচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congresss BJP Facebook
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE