Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bihar Assembly Election 2020

কংগ্রেসের ঢিলেমিতেই কি ধাক্কা মহাজোটে

এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত ৭০টি আসনে লড়ে ১৯টিতে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

রাহুল গাঁধী ও তেজস্বী যাদব। ছবি পিটিআই।

রাহুল গাঁধী ও তেজস্বী যাদব। ছবি পিটিআই।

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৯
Share: Save:

বিহারে আইপিএল ফাইনালের রাতে স্ট্রাইক রেটে পিছিয়ে পড়ল কংগ্রেস। আর তার জের এসে পড়ল মহাজোটের সরকার গড়ার সম্ভাবনায়। এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত ৭০টি আসনে লড়ে ১৯টিতে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

এমন নয় যে, বিহারে কংগ্রেসকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল বিস্তর। কিন্তু এখন তীরে এসে তেজস্বী যাদবের তরী ডোবার সম্ভাবনায় প্রশ্ন উঠছে, এমন নড়বড়ে ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে কোন ভরসায় ৭০টি আসনে লড়তে গিয়েছিল কংগ্রেস? তেজস্বীই বা অত আসন ছাড়লেন কেন? শুনতে হচ্ছে কটাক্ষ, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ভরাডুবি হয়েছিল অখিলেশ যাদবের। বিহারে সুবিধা হল না তেজস্বীরও। অনেকের মতে, কংগ্রেসের দৌড় জানা বলেই বাংলার বিধানসভা ভোটের সমীকরণে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তামিলনাড়ুতে কম আসন ছাড়ার কথা ভাবতে হচ্ছে ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনকে।

কংগ্রেস মুখপাত্র আমন পানওয়ারের দাবি, যে ৭০টি আসনে তাঁদের লড়তে হয়েছে, তার ৬৫টিতেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেশি ভোট পেয়েছিল এনডিএ। সেই হিসেবে এই ফল খারাপ নয়। বরং ভোট বেড়েছে দলের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কঠিন মাটিতে লড়াইয়ের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি, ঠিক প্রার্থী বাছাই, কৌশলী প্রচারের দরকার ছিল। এর একটিও ঠিকঠাক হয়েছে কোথায়?

লকডাউনের মধ্যেও ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে নীতীশ কুমারকে পাশে নিয়ে বিহারের জন্য একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্প ঘোষণা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ে বিহার কংগ্রেস ‘ব্যস্ত থেকেছে’ টিকিট বিলি ঘিরে ঝামেলায়! অভিযোগ উঠেছিল, বিহার কংগ্রেসের সভাপতি মদনমোহন ঝা, সাংসদ তথা দলের পক্ষ থেকে বিহারের দায়িত্বে থাকা শক্তিসিংহ গোহিনের মতো নেতারা টিকিট বিক্রি করছেন টাকার বিনিময়ে। রাজপুত অধ্যুষিত কেন্দ্রে টিকিট পাচ্ছেন ব্রাহ্মণ প্রার্থী। যাদব সংখ্যাধিক্য থাকা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হচ্ছে অন্য জাতের প্রার্থীকে। আসন বিলি নিয়ে স্বজনপোষণের জেরে বসে গিয়েছিলেন একনিষ্ঠ কর্মীদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত বিহারে নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দলে তাঁর ঘনিষ্ঠ রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার হাতে তুলে দেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু ওই জাঠ নেতা জনতার ক্ষোভ কতটা ধরতে পেরেছিলেন, তা নিয়ে সংশয় যথেষ্ট।

খামতি থেকে গিয়েছে প্রচারেও। সনিয়া গাঁধী কিংবা প্রিয়ঙ্কা আসেননি। রাহুলও প্রচার সেরেছেন পুরো দায় ঘাড়ে না-নেওয়ার ভঙ্গিতে। জনতার ক্ষোভ নীতীশের বিরুদ্ধে জেনেও জনসভায় নিশানা করেছেন মোদীকে। প্রচারের শেষ দিকে ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। প্রশ্ন, তবে কি আগেই হার মেনে নিয়েছিল কংগ্রেস? শেষ পর্যন্ত পটনার মসনদ আর তেজস্বীর মধ্যে ফারাক রয়ে গেলে, অভিযোগের প্রথম আঙুল কিন্তু উঠবে কংগ্রেসের দিকেই। রাহুল দায় নেবেন কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bihar Assembly Election 2020 Congress Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE